খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০১৬: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আসুন, আমরা সকলে মিলে দক্ষিণ এশিয়াকে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে একযোগে কাজ করি। আমরা চাই সারা বিশ্বের একটি মানুষও যেন ক্ষুধার্ত না থাকে, অনাহারে না থাকে, অপুষ্টিতে না ভোগে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সার্ক কৃষিমন্ত্রীদের তৃতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) দেশগুলোর প্রতি এ আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সার্ক গড়ে তুলতে প্রয়োজন সবার যৌথ সহযোগিতা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় খাদ্যের অভাব হতে পারে।
কিন্তু দুর্যোগে এক দেশ অপর দেশকে সহযোগিতার জন্য আমরা সার্ক ফুড ব্যাংক ও সার্ক সিড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দারিদ্র্য বিমোচনেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার উপর জোর দেন তিনি। এছাড়া টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য স্বল্প দামে কৃষি বীজ সরবরাহ, কৃষি উৎপাদন খরচ কমানো, প্রান্তিক চাষীদের স্বার্থ সুরক্ষা এবং কৃষি বিপণন ব্যবস্থা জোরদার করার তাগিদ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য ও কৃষি উৎপাদন, জনগণের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা বিধান সর্বোপরি দক্ষিণ এশিয়ার সকল দেশে খাদ্য নিরাপত্তা তৈরির ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত আইনি কাঠামো প্রণয়ন ও প্রয়োগে আমার সরকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।
সার্কভুক্ত বেশিরভাগ দেশেরই অর্থনীতি এখনও প্রধানত কৃষিনির্ভর। যদিও কোনো কোনো দেশের জিডিপিতে কৃষির অবদান ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে, তবুও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, খাদ্য ও পুষ্টির যোগান এবং শিল্পের কাঁচামাল সরবরাহের ক্ষেত্রে কৃষি এখনও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষির ১৬ শতাংশ অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশের কৃষির ব্যাপক অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
এক দশকে খাদ্যশস্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩ গুণ এবং শাকসবজির উৎপাদন বেড়েছে ৫ গুণ। বছরে ৩৪ মিলিয়ন টন চাল উৎপাদন করে আমরা চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করেছি। বর্তমানে নিজস্ব চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশ থেকে চাল রফতানির কথাও তুলে ধরেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী। এতে বক্তব্য রাখেন- ভারতের কৃষিমন্ত্রী রাধা মোহন সিং ও সার্কের মহাসচিব অর্জুন বাহাদুর থাপা। এ ছাড়াও এতে অংশ নেন ভুটানের কৃষিমন্ত্রী যেশি দরজি, নেপালের কৃষিমন্ত্রী হরিবল প্রসাদ গাজুরেল ও পাকিস্তানের জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তামন্ত্রী সিকান্দার হায়াৎ খান বোসান প্রমুখ।