Fri. Mar 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

6kখোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০১৬: বাংলাদেশকে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ থেকে মুক্ত করে সকলের জন্য নিরাপদ বাসভূমিতে পরিণত করতে দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার দৃঢ় লক্ষ্য নিয়ে বর্তমান সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দেশে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এখানে আজ বাসসকে একথা বলেন । তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও গতিশীল নেতৃত্বে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ইতোমধ্যেই বিশ্বের স্বীকৃতি অর্জন করেছে।
তাঁর (শেখ হাসিনার) এটি নিশ্চিত করেছে যে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী তৎপরতার জন্য কাউকে বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করতে দেয়া হবে না। মন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বিশ্বসম্প্রদায়ের সহযোগিতায় দেশে এবং এ অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তিনি পুরোভাগে রয়েছেন। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রায়োগিক পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান বলেন, সরকারের প্রধান লক্ষ্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা।
এই লক্ষ্য সামনে রেখে সরকার কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড সাইবার ক্রাইম ইউনিট, পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবি আই), স্পেশাল সিকিউরিটি অ্যান্ড প্রটেকশন ব্যাটালিয়ন (এসপিবিএন) গঠন করেছে এবং সকল ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম রোধে বিদ্যমান সকল বাহিনীকে ধাপে ধাপে শক্তিশালী করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের ফলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ও অবস্থান আরো উজ্জ্বল হচ্ছে এবং বিশ্বসম্প্রদায়ের স্বীকৃতি অর্জন করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার ও এ্যাওয়ার্ড লাভ করেছেন। এতে বাংলাদেশে জনমুখী শাসনের অবস্থান আরো দৃঢ় হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার দেশে প্রথমবারের মতো সন্ত্রাস বিরোধী আইন ২০০৯ প্রণয়ন করে এবং ২০১১ সালে তা হালনাগাদ করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ মোকাবেলায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২, পারস্পরিক সহযোগিতা আইন ২০১২ এবং আরো কতিপয় কঠোর ও কার্যকর আইনও প্রণয়ন করেছে। সেন্টার ফর রিসার্চ এ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন কেবল দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে নয়, বিশ্বের সকল উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত। বিগত কয়েক বছর এবং বিশেষভাবে গত সাত বছর দেশ শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্থিতিশীল সামষ্টিক অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী, ব্যাপক অবকাঠামোগত কর্মসূচি এবং মানবাধিকার ও সামাজিক উন্নয়ন সূচকে ধারাবাহিক ঊর্ধ্বগতির প্রবণতা প্রত্যক্ষ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারের আর্থ-সামাজিক ও মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নের সাফল্যের জন্য বিশ্ব সংস্থার প্রভূত প্রশংসা পেয়েছেন। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আরোহনের আগে শেখ হাসিনা দেশকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে একটি অগ্রসর দেশে পরিণত করতে ‘রূপকল্প-২০২১’ ঘোষণা করেন- যার অন্যতম লক্ষ্য ছিলো ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে এবং ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এ পরিণত করা। স্বাধীনতার পর এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এখন একটি নি¤œ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং ব্যাপক ডিজিটালকরণের ফলে বাংলাদেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির (আইসিটি) কেন্দ্রে পরিণত হতে যাচ্ছে। বর্তমানে সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে তার রূপকল্প-২০২১-এর প্রতিশ্র“তি পূরণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলেন, দেশ থেকে দুষ্কৃতকারীদের শেষ বীজটিও উপড়ে না ফেলা পর্যন্ত আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাকে যে কোনো মূল্যে সন্ত্রাসী, জঙ্গি ও তাদের দুষ্কর্মের সহযোগীদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারা বলেন, আইন-শৃংখলা বাহিনী সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের গ্রেফতার করছে এবং তাদের কাছ থেকে নানা ধরনের বিস্ফোরক ও বোমা বানানোর যন্ত্রপাতি উদ্ধার করছে। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমের ফলে আন্তঃদেশীয় সন্ত্রাসীদের জন্য এদেশে অভিযান পরিচালনা অথবা বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করা কঠিন হয়ে ওঠেছে।’ বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টায়ও বাংলাদেশ মূখ্য ভূমিকা পালন করছে জাতিসংঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বাধিকসংখ্যক সৈন্য প্রেরণের মাধ্যমে।