খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০১৬: হঠাৎ করেই অশান্ত হয়ে উঠেছে প্রকৃতি। এই তীব্র গরমে অস্থিতিশীল প্রকৃতির প্রভাব পড়েছে বাজারেও। কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ টাকার মতো বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ডালের দাম। দাম বৃদ্ধির কিছুটা প্রভাব পড়েছে খাসির মাংসেও।
তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে ইলিশে। পহেলা বৈশাখকে উপলক্ষ করে মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাঁচগুন বেড়েছে ইলিশের দাম।
এরই মধ্যে মজুদ হয়ে গেছে গত কয়েক সপ্তাহের চালানের সব ইলিশ। ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল বাড়তি দামে বিক্রির জন্য আড়ৎদার থেকে শুরু করে খুচরা ব্যবসায়ীরাও ইলিশ আটকে রাখছেন বলে অভিযোগ করেছেন কারওয়ান বাজারের কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী।
এক মাছ ব্যবসায়ী বলেন, আমার কাছে পর্যাপ্ত মাছ রয়েছে। কিন্তু এখন বিক্রি করছি না।
তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও ছোট ইলিশের হালি বিক্রি করেছেন এক হাজার ৬০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকায়। কিন্তু এখন একই আকারের মাছগুলো প্রতি পিস বিক্রি করছেন এ চেয়ে বেশি দামে।
এখন যারা কিনছেন, তারা বেশিরভাগই বেশ সামর্থ্যবান বলে জানান এ বিক্রেতা।
শীতের সঙ্গে বিদায় নিয়েছে সবজির মৌসুমও। সরবরাহ কমে আসায় বাজারে সবজির দাম বাড়তে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কয়েক পদের সবজির দাম প্রায় ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে মাছের দামও। পেঁয়াজ ও রসুনের দাম বাড়তি থাকলেও এখন স্থির। অপরিবর্তিত রয়েছে মাংস ও ডিমের দামও।
রাজধানীর কয়েকটি বাজারে খুঁজেও ইলিশের দেখা পাওয়া যায় নি। তবে খিলগাঁও বাজারে এক হালি (৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতিটি) ইলিশের দাম ১৩ হাজ্রা টাকা চেয়েছেন বিক্রেতারা।
দু-একজন বিক্রেতা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবারও বড় আকারের ইলিশের হালি তারা ২৩ হাজার টাকা দাম চেয়েছেন।
তবে সবজি ও অন্যান্য পণ্যের দাম বাড়তির দিকে থাকলেও খুব বেশি অস্থিতিশীল নয়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২২ থেকে ২৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও আলু বিক্রি হয়েছে ১৮/২০ টাকায়। প্রতি পাল্লা (৫ কেজি) দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা দরে। আকার ভেদে এই দাম কম-বেশি রয়েছে।
প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি আদা ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। আর চায়না আদা ৯০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহে আদার দাম কিছুটা কম ছিল বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
বিভিন্ন ধরনের সবজির মধ্যে প্রতি কেজি টমেটো ৬০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, বেগুন জাতভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শিম ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
ভোগ্যপণ্যের বাজার অনেকটা অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে কিছুটা বেড়েছে ডালের দাম। দেশি মসুরের ডাল ১৬০ টাকা, আমদানি মসুরের ডাল ১৩০ টাকা ও ক্যাঙ্গারু জাতের মসুরের ডাল ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
খোলা সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৮৫ টাকা দরে। প্যাকেটজাত তেল ৯০ আর বোতল তেল প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়।
মুদি পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি খোলা আটা ৩৪ থেকে ৩৫ টাকা, দুই কেজি ওজনের প্যাকেটজাত আটা ৭০ থেকে ৭২ টাকা, ময়দা ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, দুই কেজি ওজনের প্যাকেটজাত ময়দা ৮৮ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।