Sat. Mar 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

9খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০১৬: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকে ফিরে কোনো খোঁজখবর নেই সৌম্য সরকারের। মুঠোফোনে তাঁকে পাওয়া যাচ্ছে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষ্ক্রিয়। এড়িয়ে চলছেন সংবাদমাধ্যমও। আপন পৃথিবীর বাইরে কারও সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে তাঁর যেন ভীষণ অনীহা। প্রথম আলোর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি কল্যাণ ব্যানার্জির ঐকান্তিক চেষ্টায় সৌম্যকে কাল পাওয়া গেল সাতক্ষীরার মাঠপাড়ার নিজ বাড়িতে।
ভারত থেকে ফেরার পর বাংলাদেশ দলের সবাই যেখানে ছুটির আনন্দে আছেন, সৌম্যর দিন কাটছে অন্যভাবে। নিভৃতে চালিয়ে যাচ্ছেন ফর্মে ফেরার লড়াই। সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি কলেজ মাঠে নিয়ম করে অনুশীলন করছেন। কখনো বা স্থানীয় বয়সভিত্তিক ক্রিকেটারদের সঙ্গে ম্যাচ খেলছেন। ফিটনেস ধরে রাখতে জিম করছেন। ছুটিতে এভাবে অনুশীলন করছেন জিজ্ঞেস করতেই ‘ওই আর কী!’ বলে এড়িয়ে যেতে চাইলেন।
তবে বাস্তবতাকে চাইলেও এড়িয়ে যেতে পারছেন না তিনি। এ পর্যন্ত খেলা ১৯টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির ১৬টিই খেলেছেন এই বছরে। কিন্তু ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণ যেন তাঁর কাছে দুর্বোধ্য এক ধাঁধা হয়ে উঠেছে। ১৬ ম্যাচে ১৫.৯৩ গড়ে রান ২৫৫। বলার মতো একটিই ইনিংস খেলেছেন, সেটিতেই জিতেছে বাংলাদেশ। সেটি এশিয়া কাপে—৪৮ রান করেছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে।
এশিয়া কাপ যেনতেন, সৌম্যর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে গেছে আরও খারাপ। যদিও বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের কাছে টুর্নামেন্টটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে তাঁর দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের কারণে। দুটি চোখধাঁধানো ক্যাচ নিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। কিন্তু ব্যাটিং-ব্যর্থতায় অসাধারণ এই ফিল্ডিংও হয়তো উপভোগ করতে পারেননি। তবে সৌম্য পেছনের ব্যর্থতা ভুলে এগোতে চান সামনে, ‘যেটা চলে গেছে সেটা নিয়ে আর চিন্তা করছি না। শুধু শুধু চিন্তা করে সামনের সুযোগগুলো নষ্ট করতে চাই না।’
সৌম্যর সামনে এখন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। লিগের কথা উঠতেই তাঁর কণ্ঠে পাওয়া গেল খুশির একটা পরশ, খুঁজে পেলেন যেন আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার রসদ। এটি তাঁর কাছে ‘সৌভাগ্যের লিগ’। ২০১৪-১৫ মৌসুমে দুর্দান্ত খেলে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে চ্যাম্পিয়ন করেছিলেন। ফাইনালে হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। ওই মৌসুমে ১৫ ম্যাচে ৬১৫ রান করে বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়ে যান তখন পর্যন্ত মাত্র ১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা সৌম্য।
এবারের প্রিমিয়ার লিগও নতুন চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে সৌম্যকে। এই চ্যালেঞ্জ নিজেকে ফিরে পাওয়ার। তাঁকে অবশ্য অনুপ্রাণিত করছে লিগটা ৫০ ওভারের ক্রিকেট বলেই। টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে না পারলেও এই সংস্করণে তিনি দারুণ উজ্জ্বল। ১৬ ওয়ানডেতে ৪৯.৪২ গড়ে ১ সেঞ্চুরি ও ৪ হাফ সেঞ্চুরিতে রান ৬৯২। সৌম্যও প্রেরণা খুঁজে নিচ্ছেন ওয়ানডেতে খেলা তাঁর অসাধারণ কয়েকটি ইনিংস থেকে, ‘এখন এক দিনের ম্যাচ, আলাদা সংস্করণের খেলা। ওয়ানডেতে বেশ কিছু ভালো ইনিংস ছিল আমার। বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তানের বিপক্ষে। এখন সামনে যে সুযোগ আসবে, সেগুলোতে ভালো করতে চাই।’
খারাপ সময় যাচ্ছে, কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট এখনো সংক্ষিপ্ত সংস্করণের ক্রিকেটে সৌম্যকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবতেই পারছে না। তিনি নিজেও চান না সেই সময়টা আসুক, চান না বলেই ঢাকা প্রিমিয়ার লিগেই ছন্দটা ফিরে পেতে সৌম্য উন্মুখ।