Mon. Mar 17th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

47খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১০ এপ্রিল ২০১৬: দক্ষিণ ভারতের কেরালায় একটি মন্দিরে আতসবাজি প্রদর্শনীর সময় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন, গুরুতর আহত হয়েছেন আরও প্রায় চারশোর কাছাকাছি। প্রায় দশ থেকে পনেরো হাজার মানুষ কোল্লাম শহরের ওই মন্দিরে আতসবাজির প্রদর্শনী দেখতে হাজির হয়েছিলেন, সে সময় বাজির মজুতে হঠাৎ আগুন ধরে যাওয়াতেই এই মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কেরালা রাজ্য সরকার এই অগ্নিকাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন। কোল্লামের পুত্তিঙ্গাল মন্দিরে এই আতসবাজির প্রদর্শনী চলার কথা ছিল কাল মাঝরাত থেকে আজ সকালের আলো না-ফোটা পর্যন্ত, আর সেই উপলক্ষে সেখানে জড়ো হয়েছিলেন হাজার হাজার মানুষ। কিন্তু ভোররাতের দিকে আচমকাই একটি বাজির স্ফুলিঙ্গ এসে পড়ে জড়ো করে রাখা আতসবাজির স্তূপে, আর নিমেষে সেখানে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে ভয়াবহ আগুন।
প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকাটি। ছড়িয়ে পড়া আগুনের শিখায় বহু মানুষ প্রাণ হারান, প্রাণ বাঁচানোর জন্য মানুষের ধাক্কাধাক্কি আর হুড়োহুড়িতেও হতাহত হন অনেকে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ভেঙে পড়ে মন্দির চত্বরের একটি দোতলা ভবন, যেটির চারদিকে মানুষ ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিলেন। একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলছিলেন তারা জানতেন এই আতসবাজি প্রদর্শনীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। তিনি বলেন, আমরা বন্ধুরা মিলে আতসবাজি দেখতে এসেছিলাম, কিন্তু অগ্নিকান্ডে আমার বন্ধুর হাত-পা কাটা গেছে, ও এখন হাসপাতালে ভর্তি।
মন্দিরের দুটো গোষ্ঠী নিজেদের মধ্যে পাল্লা দিয়ে প্রতি বছরই আতসবাজি ফাটায় – কিন্তু এবারে জেলা প্রশাসন তার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। কিন্তু আতসবাজি তার অনেক আগে থেকেই জড়ো করা শুরু হয়ে গিয়েছিল, ফলে তা আর বন্ধ করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চান্ডি এই অগ্নিকান্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ইতিমধ্যেই। আর ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং জানিয়েছেন, এই ট্র্যাজেডির মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যকে সবরকমভাবে সাহায্য করছে।
রাজনাথ সিং বলেছেন, কোল্লামের এই অগ্নিকান্ড খুব বড় মাপের একটা দুর্ঘটনা – সকালে খবর পাওয়ামাত্র আমি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি, জানিয়েছি আমরা যে কোনও রকম সাহায্যে প্রস্তুত। মুখ্যমন্ত্রীর অনুরোধে গুরুতর আহতদের ফেরি করতে দুটো হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছে, অ্যালার্ট করা হয়েছে ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সকেও। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে ঘটনাস্থলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিকেলে মি মোদি কোল্লামের ওই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন – তিনি সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন দিল্লির সেরা হাসপাতালগুলো থেকে পনেরোজন বার্নস ইউনিট বিশেষজ্ঞকেও। আগুনে নিহতদের প্রত্যেকের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চান্ডি দশ লক্ষ রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।