খোলা বাজার২৪,সোমবার, ১১ এপ্রিল ২০১৬: সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেওয়ায় ওলামা লীগ নেতাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানোর পাশাপাশি এই সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কী সম্পর্ক, তা স্পষ্ট করার আহ্বান এসেছে একটি সমাবেশ থেকে।
পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী ওলামা লীগের কর্মসূচির প্রতিবাদে সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চা’র এক সমাবেশে বক্তারা এই দাবি জানান।
সমাবেশে মোর্চার আহ্বায়ক আবেদ খান বলেন, “ভূইফোঁড় সংগঠন ওলামা লীগ আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে প্রতারিত করছে। এরা স্বচ্ছন্দে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছে।
“পুলিশ যদি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে বাধা দিতে পরে, তাহলে দেশবিরোধী এবং সরকারের বিরুদ্ধে কর্মসূচি দেওয়া এই সংগঠনকে কেন প্রতিরোধ করা হবে না।”
শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানবন্ধন থেকে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধের দাবি জানায় ওলামা লীগ। হিন্দু সম্প্রদায়ের এস কে সিনহাকে প্রধান বিচারপতি করার বিরোধিতাও করে সংগঠনটি।
ওলামা লীগ স্বীকৃত সহযোগী সংগঠন নয় বলে আওয়ামী লীগ দাবি করলেও এই সংগঠনটির বিভিন্ন কর্মসূচিতে দলের নেতাদের অংশগ্রহণ দেখা যায়। তেমনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যায় সংগঠনটির ব্যানারসহ উপস্থিতি।
‘জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ মোর্চা’র সমাবেশে গণজাগরণ মঞ্চের একাংশের নেতা কামাল পাশা চৌধুরী বলেন, “আওয়ামী লীগের অনেক নেতা বিচ্ছিন্নভাবে বলছেন, ওলামা লীগ তাদের সংগঠন নয়। কিন্তু এটা পরিষ্কার করা দরকার। আওয়ামী লীগ নেতাদের বলব, আপনারা পত্রিকায় বিবৃতি দেন।”
“যে পরিস্থিতি চলছে, তাতে ৭৫ এর প্রেতাত্মার ছায়া দেখতে পাচ্ছি। আজকে এরা বলছে, পহেলা বৈশাখ করা যাবে না; কাল বলবে, জাতীয় সংগীত গাওয়া যাবে না।”
সমাবেশের ব্যানারে লেখা ছিল- “মুখোশধারী জঙ্গি পাকিস্তানি প্রেতাত্মা আওয়ামী ওলামা লীগ নামধারী দুর্বৃত্তদের নিষিদ্ধ কর, প্রতিহত কর।”
গণজাগরণবিরোধী হেফাজতে ইসলামের সমরূপ দাবি তুলেও সমালোচনায় পড়তে হয়েছে ওলামা লীগকে।
কামাল পাশা বলেন, “গণজাগরণ মঞ্চের প্রথম বিরোধিতা করেছিল এই ওলামা লীগ। এরা মুখোশধারী আওয়ামী লীগ।”
গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক আলামিন বাবু বলেন, “এই ওলামা লীগই হয়ত ব্লগার হত্যা করছে। এরা জঙ্গি সংগঠন।”
ওলামা লীগকে প্রতিরোধ করার ঘোষণা দিয়ে আবেদ খান বলেন, “স্বাধীনতাবিরোধী কোনো শক্তি স্বাধীন দেশে মেনে নেওয়া হবে না। ওলামা লীগকে রাস্তায় দেখা গেলে আমরাও রাস্তায় নামব।”
ওলামা লীগের খবর প্রচার না করতেও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান সাবেক এই সম্পাদক।
মুক্তিযোদ্ধা মহিদুল আলম ইদু ওলামা লীগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
“প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ করব, ওলামা লীগের সকল সদস্যকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করুন। আপনি (প্রধানমন্ত্রী) রাজাকারদের বিচার করছেন। আমরা চাই আপনি সকল মৌলবাদীকে পরাজিত করবেন।”
শহীদ বুদ্ধিজীবীর সন্তান তৌহিদ রেজা নূর বলেন, “যারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, তাদের দলে ঠাঁই না দেওয়ার জন্য রাজনীতিবিদদের অনুরোধ করব।
“আওয়ামী লীগেও দেখেছি অনেকে ফুল দিয়ে যোগদান করে। তাদের যত কাছে নেবেন নতুন প্রজন্ম তত দূরে সরে যাবে।”