খােলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১২ এপ্রলি ২০১৬:মির্জা ফখরুল এক সাক্ষাত্কারে বলেন, খালেদা জিয়ার ‘সাজা’ হয়ে গেলে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানই দলের হাল ধরবেন। তিনি জানান, গুঞ্জন যতই থাক, আপাতত রাজনীতিতে আসার সম্ভাবনা নেই জোবাইদা রহমানের। ১৯ মার্চ দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়ার ১০ দিন পর গত ২৯ মার্চ বিএনপির সপ্তম মহাসচিব হিসেবে নিয়োগ পান মির্জা ফখরুল। দীর্ঘ সাক্ষাত্কারে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি ৫ জানুয়ারিকে কেন্দ্র করে দুদফা আন্দোলনের ব্যর্থতা এবং বিএনপিকে ঘিরে তৈরি হওয়া নানা প্রশ্নের খোলামেলা জবাব দেন মির্জা ফখরুল।
*মহাসচিব হিসেবে প্রথমেই আপনার অনুভূতি জানতে চাই…
মির্জা ফখরুল : নতুন কিছু নয়, কারণ গত প্রায় পাঁচ বছর ভারপ্রাপ্ত থেকে এই পদে আমি দায়িত্ব পালন করছি। তবে নেতাকর্মীদের আবেগ ও উচ্ছ্বাস আমাকে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
*বিএনপিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আপনি কতখানি আশাবাদী?
মির্জা ফখরুল : আমি সাধ্যমতো চেষ্টা করব। বিএনপির সবচেয়ে বড় সম্পদ এ দেশের জনগণ। কিন্তু নানা কারণে এই জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সরকার দমিয়ে রেখেছে। তাদের অধিকার খর্ব করা হয়েছে। তাই বিএনপির মতো বড় দলের মহাসচিব হিসেবে তাদের সেই অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে শরিক হয়ে সংকট কাটিয়ে ওঠায় অবদান রাখার চেষ্টা করব।
*আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে মহাসচিবের ভূমিকা এখন অনেকটাই গৌণ হয়ে গেছে বলে মনে করা হয়, অর্থাৎ মহাসচিবের কোনো ক্ষমতা নেই…
মির্জা ফখরুল : দেখুন গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিএনপির সর্বময় ক্ষমতা চেয়ারপারসনের। আর মহাসচিবের দায়িত্ব হলো দলের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করা। পাশাপাশি রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা। তবে সব পরিস্থিতি বিশ্লেষণেই মহাসচিবের ভূমিকা রয়েছে। তিনি চেয়ারপারসনকে পরামর্শ দিতে পারেন না— এ কথা কোথাও বলা নেই।
*কাউন্সিলে ‘ভিশন ২০৩০’ বক্তৃতায় খালেদা জিয়া থ্রি-জির কথা বলেছেন। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ‘সুনীতি’, যা বিএনপির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অভিযোগ আছে, দল পরিচালনার ক্ষেত্রে বিএনপিতে কোনো গণতন্ত্র নেই…
মির্জা ফখরুল : পূর্ণমাত্রায় গণতন্ত্র এ দেশের কোনো দলে নেই। কাউন্সিলে কাউন্সিলররাই দল পরিচালনার ভার চেয়ারপারসনের হাতে তুলে দেন। ফলে তাঁদের মতামত নিয়েই দল চলছে এটি বলা যায়। বহু দেশে এভাবেই দল চলে। সুতরাং ঢালাওভাবে বলা ঠিক নয় যে বিএনপিতে গণতন্ত্র নেই।
*সদ্য ঘোষিত কমিটির (যুগ্ম মহাসচিব ও সাংগঠনিক সম্পাদক) ব্যাপারে আপনার মূল্যায়ন কী?
মির্জা ফখরুল : তাঁদের এই মনোনয়ন দলে প্রাণসঞ্চার করবে। কমিটিতে তারুণ্যের প্রভাব ফুটে উঠছে।
*শোনা যায় ‘চেয়ারপারসনের প্রতি বিশ্বস্ততাই’ নাকি কমিটিতে জায়গা পাওয়ার একমাত্র যোগ্যতা…
মির্জা ফখরুল : না, এটি ঠিক নয়। বিএনপিতে চেয়ারপারসনের বিশ্বস্ত সবাই। কারণ গত সাত-আট বছরে এত চাপের মধ্যেও কোনো নেতাকর্মী দল ছেড়ে যাননি।
*স্থায়ী কমিটি কবে দেওয়া হবে?
মির্জা ফখরুল : খুব শিগগির।
*এক নেতার এক পদ নীতি বিএনপির মতো দলে কার্যকর করা সম্ভব?
মির্জা ফখরুল : অবশ্যই সম্ভব। তবে এর জন্য অবশ্যই আগে সব কমিটি ঘোষণা হতে হবে। মহাসচিব হওয়ার পর আমি আগের দুটি পদ ছেড়ে দিয়েছি। আশা করি সবাই একই নীতি অনুসরণ করবেন।
*সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের সঙ্গে আপনার বিরোধ রয়েছে বলে অনেকে মনে করেন…
মির্জা ফখরুল : একেবারেই ঠিক নয়। এগুলো ধারণাভিত্তিক। সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান এবং আমি উভয়েই ওই পদে ছিলাম। কোনো সমস্যা হয়নি।
*স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ অনেকের সঙ্গে আপনার বিরোধ ছিল। মহাসচিব হওয়ার পর তাঁর সঙ্গে আপনার বৈঠকের কোনো তাৎপর্য আছে কী?
মির্জা ফখরুল : গণতান্ত্রিক একটি দলে এ ধরনের ঘটনা বা আলোচনা অস্বাভাবিক নয়। আমি মনে করি গয়েশ্বর বাবুসহ প্রত্যেকের সঙ্গে আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। তাঁর সঙ্গে দেখা হওয়ার পর আন্তরিক উষ্ণতা পেয়েছি।
*বিএনপির কাউন্সিলে ২০ দলীয় জোটের বাইরের রাজনৈতিক দলগুলোকে দেখা যায়নি। এর কারণ কী?
মির্জা ফখরুল : অন্য দলগুলো কেন আসেনি সেটি তাদের বিষয়। তবে তারা মনে করে থাকতে পারে যে ধরনের ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, তাতে বিএনপির কাউন্সিলে এলে তারা সমস্যায় পড়তে পারে। এটিও কারণ হতে পারে।
*সংস্কারপন্থীদের ব্যাপারে কাউন্সিলে কোনো বার্তা নেই…
মির্জা ফখরুল : সংস্কারপন্থী শব্দটার মধ্যেই বিতর্ক সৃষ্টির কৌশল রয়েছে। কিন্তু বিএনপিতে সংস্কার-অসংস্কার বলে কিছু নেই। যাঁরা যোগ্য তাঁরাই দলে পদ পাবেন।
*দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে বলুন…
মির্জা ফখরুল : ৫ জানুয়ারির একতরফা এবং ভোটারবিহীন নির্বাচনের পর গণতন্ত্রের আবরণে এখন স্বৈরশাসন চলছে। বিএনপি ও বিরোধী দলগুলোর পাশাপাশি ভিন্ন মতাদর্শের মানুষের ওপরও সরকার দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। গণতন্ত্রের ন্যূনতম স্পেস বা ক্ষেত্র নেই। এই অবস্থার মধ্যেও বিএনপির জাতীয় কাউন্সিলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে হাজার হাজার মানুষ শামিল হয়েছে। প্রমাণ হয়েছে, সরকার শত চেষ্টা করেও বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি খুব বেশি নষ্ট করতে পারেনি।
*সরকারবিরোধী আন্দোলনের কথা ভাবছেন?
মির্জা ফখরুল : প্রথমে আমরা সংলাপের মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। কারণ দেশি-বিদেশি শক্তি এ ব্যাপারে তাগিদ দিচ্ছে। বিএনপি চেয়ারপারসন এখনো সংলাপের কথা বলে যাচ্ছেন। কিন্তু সরকার এতে কর্ণপাত না করলে অবশ্যই জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে যাব।
*কিন্তু আন্দোলনে বিএনপি দুবার ব্যর্থ হয়েছে…
মির্জা ফখরুল : আন্দোলনের সফলতা-ব্যর্থতা ইতিহাসের সঙ্গে মিলিয়ে দেখলে এ কথা বলা যাবে না। প্রথমত, সরকার ন্যূনতম গণতান্ত্রিক চর্চার মধ্যে এখন নেই। পুলিশ বাহিনীসহ প্রায় সব প্রতিষ্ঠান তারা দলীয়করণের মধ্য দিয়ে ধ্বংস করেছে। কোনো প্রতিষ্ঠানই আর স্বাভাবিকভাবে চলছে না। ফলে গণতন্ত্রও মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কেবল বিএনপিকে দায়ী করলে চলবে না। তা ছাড়া যুগে যুগে দেশে স্বৈরাচার বা ফ্যাসিস্ট সরকারের চরিত্রও একই রকম। যখন তারা ক্ষমতায় থাকে মনে হয় গাছের পাতাও তাদের কথা ছাড়া নড়ে না। কিন্তু যখন পড়ে যায় তখন আর কিছুই থাকে না। এই সরকারেরও একদিন পতন হবে।
*প্রথমবার গুলশানের বাসায় বালুর ট্রাক দিয়ে খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা হয়। কিন্তু পরেরবারও একই কায়দায় তাঁকে অবরোধ করা হয় গুলশান কার্যালয়ে। তার অর্থ বিএনপির কর্মকৌশলেই ভুল ছিল?
মির্জা ফখরুল : ভুল নয়, বস্তুত সারা দেশে দুর্বার আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু নজিরবিহীন স্বৈরাচারী কায়দায় সরকার বালুর ট্রাক দিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে। এ ক্ষেত্রে মহানগরী বিএনপির হয়তো সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন। কিন্তু বাস্তব অবস্থাটা বুঝতে হবে। এ দেশের ইতিহাসে কখনো এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে কি না তা আমি সবাইকে ভেবে দেখতে বলব। তা ছাড়া আন্দোলনে যত মানুষ মারা গেছে তা এ দেশের কোনো আন্দোলনে হয়েছে? মূল ব্যাপারটা হলো, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে গায়ের জোরে থাকবে। তাদের হাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে, বন্দুক আছে। বিরোধী দল নিরস্ত্র। আমরা তো আর যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারি না। তারা যা করেছে একদিন ইতিহাস তার বিচার করবে। জনগণও এসব দেখতে দেখতে জেগে উঠবে।
*২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির আগে ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ কর্মসূচি নাকি হঠাৎ করেই দেওয়া হয়েছিল?
মির্জা ফখরুল : না, এটি ঠিক নয়। ২০ দলীয় জোটের বৈঠকে ওই কর্মসূচি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
*৫ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ না নেওয়া ভুল ছিল বলে অনেকে মনে করেন…
মির্জা ফখরুল : এটি এখন প্রতিকূল অবস্থা এবং নানা চাপে পড়ে কেউ কেউ বলছেন। বাস্তব অবস্থা হলো—ওই সময় দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করেছে। নির্বাচন বর্জনের ব্যাপারে ওই সময় জাতীয় ঐক্য হয়েছিল। সবাই জানতেন, ওই নির্বাচন স্বচ্ছ হবে না। বিএনপি বা ২০ দল একা নির্বাচন বর্জন করেনি।
*অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর সঙ্গে আলোচনা খোলাসা না করা বিএনপির কৌশলগত ভুল ছিল বলে অনেকে মনে করেন। কেউ কেউ এ জন্য আপনাকে দায়ী করেন…
মির্জা ফখরুল : এটি ছিল ওই সময়ের রাজনৈতিক সংকট সমাধানে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আলোচনা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে ওই আলোচনার বিষয়বস্তু বা ফলাফল মিডিয়ায় যাবে না এটাই সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ছিল। ফলে আমরা যদি আলোচনার বিষয়বস্তু প্রকাশ করতাম সে ক্ষেত্রে জাতিসংঘ রুষ্ট হতো। এ ছাড়া সেখানে বিএনপির আরো তিন নেতা ছিলেন। এটি আমার একার বিষয় ছিল না। যদি কেউ বলে থাকেন পাঁচ বছর ওই জন্য ভারপ্রাপ্ত; এটি তাঁদের ব্যাপার।
*সেখানে আলোচনা তাহলে কী হয়েছিল?
মির্জা ফখরুল : আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছিলেন, জাতীয় পার্টি একতরফা নির্বাচন করেছে। আপনারাও ১৫ ফেব্রুয়ারিতে একটা করেছেন। সুতরাং সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে আমাদেরও ৫ জানুয়ারির একটি নির্বাচন করতে দিন। এরপর যত দ্রুত সম্ভব আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নতুন আরেকটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।
*তাহলে নির্বাচনের ব্যাপারে তাঁরা কোনো সময়সীমার কথা বলেননি?
মির্জা ফখরুল : তাঁরা বলেছিলেন ‘যত দ্রুত সম্ভব’ আরেকটি নির্বাচন হবে।
*কিন্তু এখন তো সরকারি দল অস্বীকার করছে…
মির্জা ফখরুল : অস্বীকার করলে কী করা যাবে! বোঝা যাচ্ছে; ক্ষমতায় থাকার জন্য তাঁরা ব্লুপ্রিন্ট আগেই করেছিলেন। তাই জাতিংঘের আহ্বানে তাঁরা এখন সারা দিচ্ছেন না।
*বলা হয় শুধু ভারতের সমর্থন নিয়ে সরকার টিকে আছে…
মির্জা ফখরুল : ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বিএনপিরও ভালো। এর প্রমাণ হলো, বিএনপি নেত্রী ভারত সফরে গেলে তাঁকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল। ওই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো গভীর হয়েছে।
*ভারত সমর্থন না দিলে, নিরপেক্ষ অবস্থান না নিলে বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়া কঠিন বলে অনেকে মনে করেন…
মির্জা ফখরুল : এ দেশে গণতন্ত্রের নামে এখন যা ঘটছে তা ভারতীয়রাও জানেন। আমি মনে করি বৃহৎ গণতান্ত্রিক ওই দেশটির নীতিনির্ধারকরা অবশ্যই এ দেশে গণতন্ত্রের বিকাশ দেখতে চাইবেন।
*বৈশ্বিক বাস্তবতায় জামায়াতের ব্যাপারে বিএনপি চাপে আছে বলে মনে করা হয়। এ প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান বদলেছে কি?
মির্জা ফখরুল : জামায়াতের সঙ্গে একসঙ্গে আন্দোলন করার জোট এখনো অটুট। ভবিষ্যতে জোটের কলেবর আরো বাড়বে। বেশকিছু দলের সঙ্গে কথাও বলেছি আমরা। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য তৈরি হবে বলে আশা করছি।
*কী প্রক্রিয়ায় চাপের মধ্যে ফেলে আপনারা সরকারের কাছ থেকে নির্বাচন আদায় করবেন?
মির্জা ফখরুল : সরকারের ওপর এমনিতেই প্রচণ্ড চাপ রয়েছে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য। কারণ দেশে-বিদেশে এ সরকার এখনো বৈধতা পায়নি; মুখে তারা যত কথাই বলুক। অবশ্যই তাদের নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এ ছাড়া সময় হলে আমরাও আন্দোলনে যাব।
*কবে নাগাদ নতুন নির্বাচন আদায় করতে পারবেন?
মির্জা ফখরুল : এটি নির্ভর করছে আন্দোলনের সফলতা ও সরকারের সদিচ্ছার ওপর। আমি এ ব্যাপারে কোনো সময়সীমা দিতে রাজি নই।
*কাউন্সিলে খালেদা জিয়া জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা আছে কি না?
মির্জা ফখরুল : হ্যাঁ, দলের নির্বাহী কমিটি ঘোষণার পর এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
*তার অর্থ আপনারা কী রাজনৈতিক দলগুলোকে কোনো চিঠি দিচ্ছেন?
মির্জা ফখরুল : এখনই বলতে চাচ্ছি না।
*জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টসহ বিভিন্ন মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা হলে বিএনপি কিভাবে চলবে?
মির্জা ফখরুল : চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান দলের নেতৃত্ব দেবেন। স্থায়ী কমিটি নিয়ে তিনিই দল পরিচালনা করবেন। এ বিধান গঠনতন্ত্রেই আছে। এ ছাড়া স্থায়ী কমিটিসহ দলের সর্বস্তরের কমিটি থাকবে।
*খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান কী রাজনীতিতে আসছেন?
মির্জা ফখরুল : আপাতত আসছেন না।
*সরকার বিএনপিকে ভাঙতে চাইছে এ অভিযোগ কতখানি সত্যি?
মির্জা ফখরুল : সরকার নানাভাবে ভাঙতে চাইছে এটি সত্যি। প্রমাণ হলো, ২০ দলের শরিক একটি দলের কিছু অংশকে তারা নানা প্রলোভন দেখিয়ে সরিয়েছে। এ ছাড়া ‘আসল বিএনপি নকল বিএনপি’ নামের কিছু ভুঁইফোড় সংগঠন তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু গত সাত বছরে প্রমাণ হয়েছে অনেক অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েও তারা বিএনপির একজন কর্মীকেও নিয়ে যেতে পারেনি।
*বিএনপি নেতাদের অনেকের সরকারের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ রয়েছে বলে গুঞ্জন রয়েছে…
মির্জা ফখরুল : এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। সরকারের অপপ্রচার।
*গুলশান কার্যালয়ের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ; তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে খালেদা জিয়াকে দেখা করতে দেওয়া হয় না…
মির্জা ফখরুল : অভিযোগ সঠিক নয়। তৃণমূল নেতারা গুলশানে প্রায় প্রতিদিন চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করেন।
*চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের অধিকাংশ কর্মকাণ্ড রাতে হওয়ায় অনেকে রসিকতা করে বিএনপিকে গভীর রাতের পার্টি বলে থাকে।
মির্জা ফখরুল : প্রথমত, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অধিকাংশ কর্মকাণ্ড দিনে পরিচালিত হয়। দ্বিতীয়ত, চেয়ারপারসনের কার্যালয়ের কিছু বৈঠক এবং সিদ্ধান্ত রাতে হলেও আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে মুহূর্তের মধ্যে সেগুলো মিডিয়ায় যেতে পারে।