Sat. Jun 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

10kখোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৩ এপ্রিল ২০১৬: সাধারণত দুই ঈদে মানুষকে নাড়ির টানে ছুটতে দেখা যায়। তবে এবার বাংলা নববর্ষেও সেই জোয়ার লেগেছে।
বৃহস্পতিবার পয়লা বৈশাখের পর শুক্র, শনিবার সরকারি ছুটি হওয়ায় অনেকেই তিন দিনের ছুটি হাতে পেয়েছেন। আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরাও পাচ্ছেন কমপক্ষে দুই দিনের ছুটি। তাই বর্ষবরণের আনন্দ পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে নাড়ির টানে বাড়ি ছুটছে মানুষ।
বুধবার সকাল থেকেই রাজধানীর ব্যস্ততম বাস টার্মিনাল গাবতলীতে গিয়ে এমন দৃশ্যই দেখা যায়।
নাগরিক ব্যস্ততা আর শহুরে একঘেয়েমি জীবন ছেড়ে নববর্ষকে বরণে গ্রামের বাড়িতে যেতে মানুষ যেন উদগ্রীব হয়ে আছে। বুধবার গাবতলী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই যাত্রীদের চোখে পড়ার মত ভিড়। প্রায় প্রতিটা বাস কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের লাইন। তবে বৈশাখ উপলক্ষে যারা আগেই বাসের টিকিট কেটে রেখেছেন, তাদের এই লাইনে অংশগ্রহণ করতে হয়নি।
কথা হয় রংপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসা মোহাম্মদ আবিদ হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমি একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করি। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে এক দিন ও সাপ্তাহিক দুই দিনের ছুটি পেয়েছি। তাই যান্ত্রিক ঢাকাতে থাকার ইচ্ছে নেই। ভাবলাম মা-বাবার সঙ্গে বর্ষবরণের দিনটা উদযাপন করি।’
তিনি বলেন, ‘অফিস থেকে বাড়তি এক দিন অর্থাৎ আজ ছুটি নিলাম। কারণ আজ রাতের কোনো বাসের টিকিট পাইনি। অধিকাংশ বাসে আজকে রাতের কোনো সিট খালি নেই। তাই এক দিন বেশি ছুটি নিয়ে সকালেই রওনা দিলাম, যেন কোনো ঝামেলা ছাড়া বাড়িতে যেতে পারি।’
সাকুরা বাস কাউন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রী এস এম ইমরানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘অনেক আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রেখেছিলাম, এবারের পয়লা বৈশাখে গ্রামের বাড়ি ঝালকাঠি যাব। মা-বাবা এবং বন্ধুদের সঙ্গে বর্ষবরণের আনন্দটা ভাগাভাগি করে নেব। তাই আজ বাড়িতে যাচ্ছি। খুব আনন্দ লাগছে, কারণ অনেক দিন পরে বাড়িতে যাচ্ছি।’
ইমরান বলেন, ‘প্রায় প্রতি পয়লা বৈশাখই ঢাকাতে কাটাতে হয়। তাই খুব ভালোভাবে উদযাপন করতে পারি না। যেখানেই যাই না কেন, শুধু মানুষ আর মানুষ। নিঃশ্বাস ফেলার মতো অবস্থাও থাকে না। কিন্তু গ্রামে অনেক সুন্দর খোলামেলা পরিবেশে ঘোরা যায়। তা ছাড়া বৈশাখ উপলক্ষে আমাদের ওখানে মেলা হয়। মেলায় আমরা বন্ধুরা মিলে অনেক মজা করি।’
সাকুরা এসি বাস কাউন্টারের মাস্টার মাইনুল হোসেন বলেন, ‘সকাল থেকেই অনেক যাত্রী আসা শুরু করেছে। তবে বিকেল অথবা সন্ধ্যার পরে শুরু হবে যাত্রীদের মূল চাপ। কারণ আজ সরকারি চাকরিজীবীসহ অন্যান্যরা অফিস শেষ করে বিকেলে বা সন্ধ্যার বাসে গন্তব্য স্থানে রওনা দেবেন।’
তিনি বলেন, ‘গত তিন/চার দিন আগে থেকেই অনেকেই বাসের অগ্রিম টিকিট কিনতে আসা শুরু করেছিল। যাত্রীদের চাহিদার কারণে তাই অধিকাংশ বাসের টিকিট বিক্রি প্রায় শেষ। আর সবচেয়ে বেশি চাহিদা আজ বুধবার। আজ বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত আমাদের বাসের সকল টিকিট শেষ হয়ে গেছে।’
ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ঈগল পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ বশির বলেন, ‘পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে না। আমরা স্বাভাবিক দিনে যে রকম ভাড়া নিই, আজও তাই নিচ্ছি। শুধু রোজা ও কোরবানি ঈদের সময় সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত ভাড়া নেওয়া হয়। এখন যে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে, তা সরকারের নির্ধারণ করা ভাড়ার থেকেও অনেক কম।’