খোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৬: মুসলমানদের ঐক্যের জন্য ওআইসিভুক্ত দেশগুলোর মতভিন্নতা দূর করতে সংস্থাটির উদ্যোগ চেয়েছে বাংলাদেশ।
ইস্তানবুলে ওআইসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লিখিত বক্তব্যে এ আহ্বান জানানো হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ওই বক্তব্য পাঠ করেন বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
“মহান ইসলামিক মূল্যবোধ- ভ্রাতৃত্ব, ন্যায়বিচার ও সবার অন্তর্ভুক্তিকে এগিয়ে নিতে ঐক্য প্রয়োজন,” বলা হয়েছে এতে।
অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশন- ওআইসির ত্রয়োদশ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন মাহমুদ আলী। দুই দিনের এ সম্মেলন শুক্রবার শেষ হয়।
সন্ত্রাসবাদ ও গোষ্ঠীগত সংঘাতসহ নানা সংকটের মধ্য দিয়ে মুসলিম বিশ্ব যে অস্থির সময় পার করছে তার প্রেক্ষাপটে ‘ন্যায়বিচার ও শান্তির জন্য ঐক্য ও সংহতি’ স্লোগান নিয়ে এবারের সম্মেলন হয়। এতে ৩০টির মতো দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং ২০টির বেশি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নেন।
সম্মেলনে বিভিন্ন মুসলিম দেশের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও গোষ্ঠীগত সংঘাত, সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা, ইসলাম ভীতি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানবিক ত্রাণ সহায়তা, মুসলিম সমাজের পশ্চাৎপদতা, ফিলিস্তিন সংকট, দারিদ্র্য, উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়াবলী এবং ওআইসির দশ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়।
মুসলিম সম্প্রদায় যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন তা মোকাবেলায় ঐক্য ও সংহতির ওপর গুরুত্বারোপ করেন নেতারা।
আগামী তিন বছরের জন্য ওআইসি যে ‘যৌথ ইসলামিক অ্যাকশন’ নিয়ে এগোচ্ছে সে বিষয়ে কাজ করতে সম্মতি দিয়েছেন তারা।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে মুসলিম দেশগুলোর নেতারা বেশ কয়েকটি প্রস্তাব গ্রহণ করেন। সেগুলো হলো- ‘রেজোলিউশন অন প্যালেস্টাইন, ওআইসি ২০২৫: প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন’, চূড়ান্ত ইশতেহার ও ইস্তানবুল ঘোষণা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী মানবিক সহায়তার জন্যও ওআইসির একটি পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর জোর দিয়েছেন। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ওআইসির সহায়তা প্রত্যাশার পাশাপাশি দারিদ্র্য দূর করতে সমন্বিত পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এক্ষেত্রে দারিদ্র্য নিরসনে ‘ওআইসি-২০২৫ প্রোগ্রাম অফ অ্যাকশন’ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
১৯৭৪ সালে ওআইসির দ্বিতীয় সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐক্য ও সংহতির যে আহ্বান জানিয়েছেন তা পুনর্ব্যক্ত করা হয় শেখ হাসিনার লিখিত বক্তব্যে।
সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওআইসির প্রাধিকারমূলক ও মুক্ত বাণিজ্যের উদ্যোগ বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।
ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের মতো মুসলিম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর জন্য একযোগে কাজ করতে মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এরআগে ১২-১৩ এপ্রিল সম্মেলনের প্রস্তুতির জন্য ওআইসির সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দেন মাহমুদ আলী।
রোহিঙ্গাদের নিয়ে ওআইসির মন্ত্রী পর্যায়ের একটি গ্রুপের বৈঠকেও যোগ দেন তিনি। মিয়ানমারের নতুন সরকারের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে কার্যক্রম সম্পর্কে সেখানে আলোচনা হয়।