Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

3kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৬: চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি এলাকায় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আজ বেলা ১১টার দিকে ভাঙচুর চালিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা। তৃণমূল নেতাদের বাছাই করা প্রার্থী​র তালিকা বাদ দিয়ে ‘একতরফা’ভাবে নতুন করে প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য সাক্ষাৎকার ডাকার প্রতিবাদে এ ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ​আনতে পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এ ঘটনায় পুলিশের দুজন সদস্যও আহত হয়েছেন।
বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা জানান, আগামী ৪ জুন চট্টগ্রামের আনোয়ারা ও কর্ণফুলী থানার ১৬ ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই থানা ও থানার ১৬ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মতামত নিয়ে প্রার্থী ঠিক করে গত বুধবার কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়। এই তালিকা পাঠানোর পর মনোনয়নবঞ্চিত ব্যক্তিদের দের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে এই দুই থানার প্রার্থী বাছাইয়ের ঘোষণা দেয় দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। আজ শুক্রবার সকালে আনোয়ারার ১১ ইউনিয়নের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য সাক্ষাৎকারের সময়সূচি ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে দুই থানা থেকে আজ সকালে কয়েক শ নেতা–কর্মী নগরে অবস্থিত দক্ষিণ জেলা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা মিছিল নিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পুলিশের বাধা ডিঙিয়ে কিছু নেতা–কর্মী ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালান। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা, টিয়াল সেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় নেতা–কর্মীদের। ভাঙচুরের সময় আওয়ামী লীগ অফিসে থাকা মো. রাসেল নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী দুপুরে জানান, বেলা ১১টার কিছু আগে দুই শতাধিক নেতা–কর্মী মিছিল নিয়ে অফিসে ঢোকেন। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে অনেকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালান। রাসেল বলেন, ‘ভয়ে অফিসে থাকা আমরা দুজন পেছনের দরজা দিয়ে বের হয়ে যাই। এরপর এসে দেখি চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। কার্যালয়ের আয়নাও ভাঙা হয়েছে।’
ভাঙচুরের ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করেন। এই বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী। তিনি ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। সমাবেশে নেতা–কর্মীরা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে একতরফা প্রার্থী বাছাই–প্রক্রিয়ার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
যোগাযোগ করা হলে তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে তৃণমূলের মতামত নিয়ে দুই থানার ১৬ ইউনিয়নের প্রার্থী বাছাই করে গত বুধবার কেন্দ্রে পাঠান ভূমি প্রতিমন্ত্রী। অনুলিপি দেওয়া হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের কাছেও। কিন্তু জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনয়নবঞ্চিতের ডেকে প্রার্থী বাছাইয়ে সাক্ষাৎকারের ঘোষণা দেন। এর প্রতিবাদে আমরা হাজার খানেক নেতা–কর্মী মিছিল নিয়ে যাই। এ সময় মিছিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গুটিকয়েক লোক। এ কারণে নেতা–কর্মীদের কেউ ক্ষোভ প্রকাশ করে থাকতে পারে।’
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, মনোনয়ন বোর্ডকে উপেক্ষা করে ভূমি প্রতিমন্ত্রী কেন্দ্রে প্রার্থী তালিকা পাঠিয়েছেন। কর্ণফুলী থানার পাঁচ ইউনিয়নের পর গতকাল আনোয়ারা ও বাঁশখালীর প্রার্থী বাছাইয়ের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়সূচি ছিল। তবে তা স্থগিত করা হয়। এর মধ্যেই তারা এসে দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। তিনি বলেন, এরপরও গতকাল সকালে আনোয়ারার কিছুসংখ্যক প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে দক্ষিণ জেলা সভাপতির লালখানবাজারের বাসভবনে। তবে জেলা থেকে আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর প্রার্থী তালিকা কেন্দ্রে পাঠানো হয়নি।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসীম উদ্দিন বলেন, মনোনয়নসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে নেতা–কর্মীরা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা চালালে পুলিশ বাধা দেয়। তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। এ সময় লাঠিপেটা, টিয়ার সেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এ ঘটনায় পুলিশের দুজন সদস্য সামান্য আহত হন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হবে।