Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

5kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৬: শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানিয়ে বিএনপি বলেছে, এটা সরকারের বিরুদ্ধমত দলনেরই উদাহরণ।
বিএনপি-ঘনিষ্ঠ এই সাংবাদিকের মুক্তি না দিলে কঠোর কর্মসূচির হুমকিও দিয়ে শনিবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, “সরকার সকল মানুষের কণ্ঠরোধ করতে চায়।
“বাক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে। এখন লিখবার স্বাধীনতাও হরণ করে নেওয়া হচ্ছে।”
শনিবার সকালে রাজধানীর ইস্কাটনের বাসা থেকে শফিক রেহমানকে আটকের পর পুলিশ জানিয়েছে, পল্টন থানার রাষ্ট্রদ্রোহের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে রিজভী। পরে তিনি শফিক রেহমানের বাড়ি গিয়ে তার স্ত্রী তালেয়া রেহমানের সঙ্গে কথাও বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, “শফিক রেহমান সরকারের অনাচার-ব্যর্থতা, কুপমণ্ডুপতার বিরুদ্ধে অবিচল নির্ভয়ে লিখে যান তার শানিত লেখনীতে। শেখ হাসিনা এই ঘৃন্য অপকর্মটি করলেন এই জন্য যে, তার হুকুমদার ও বাধ্য করার নীতি শফিক রেহমানের উপর প্রয়োগ করা যায় না।
“কারণ তিনি (শফিক রেহমান) ধ্রুবতারার মতো অবিচল, সত্যের পক্ষে, ন্যায়ের পক্ষে, গণতন্ত্রের পক্ষে। শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তারের একটা নাটক তারা করলেন। আমরা এই গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।”
রিজভী শফিক রেহমানের মুক্তি দাবি করলে সাংবাদিকরা জানতে চায়, এজন্য বিএনপি কোনো কর্মসূচি দেবে কি না?
জবাবে তিনি বলেন, “মুক্তি দেওয়া না হলে কঠোর কর্মসূচির দিকে আমরা এগিয়ে যাবো। এটা দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।”
সরকার নিজের ব্যর্থতা আড়াল করতে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করেছে দাবি করে রিজভী বলেন, “এই সরকার চারিদিক থেকে ব্যর্থ। কোনো দিক তারা সামাল দিতে পারছে না। এই ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) দেশের একজন প্রতিথযশা সাংবাদিক ও গুণী মানুষকে গ্রেপ্তার করেছেন।”
প্রখ্যাত অধ্যাপক সাইদুর রহমানের ছেলে শফিক রেহমানের সঙ্গে দেড় দশক ধরে বিএনপির ঘনিষ্ঠতা দেখা যায়। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নানা কর্মসূচিতেও তিনি উপস্থিত থাকেন।
রিজভী বলেন, “শফিক রেহমান একজন জ্ঞানতাপস মানুষ। যার বাবা ছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষক, তাকে এই পরিণতি ভোগ করতে হবে? দেশের বিশিষ্ট গুণীজনদের যদি এই পরিণতি হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়?”
শফিক রেহমানকে আটক করতে গিয়ে ডিবি পুলিশের টেলিভিশন সাংবাদিক পরিচয় দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বিএনপি নেতা বলেন, “দেশ কারা চালাচ্ছে? কোন শকুনিরা এদেশটাকে ছিঁড়ে-কুড়ে টুকরো টুকরো করছে।
“প্রধানমন্ত্রী এর আগেও বলেছেন, একজন বরেণ্য আইনজীবীকে উল্লেখ করে ‘মুই কার খালুরে’। ‘আমার বেগুন আমি রাঁধব, যত খুশি লবণ দেব’- এই যে কথা-বার্তা, এ থেকে মনে হয় উনি উনার পরিবার ও উনার দল ছাড়া এদেশে কারও কোনো সম্মান নেই।”
“এই ভোটবিহীন সরকার দেশকে চরম বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে গেছে। দুর্বল, হৃদয়হীন, দাম্ভিক, কুতার্কিক প্রধানমন্ত্রী এখন অকপট সত্যভাষী গুণীজনদের নির্মূলের মহাপরিকল্পনার নির্দেশ দিয়েছেন। যার নির্মম শিকার হলেন, এই সময়ের সাহসী দুর্জয় সাংবাদিক অশীতিপর শফিক রেহমান,” বলেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত মেয়র এম এম মান্নানের গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদও জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খায়রুল কবীর খোকন উপস্থিত ছিলেন।