Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

12kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ১৬ এপ্রিল ২০১৬: ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমকে যে নম্বর থেকে টেলিফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে তদন্তে নেমেছে গোয়েন্দারা। গত বুধ এবং বৃহস্পতিবার প্রতিমন্ত্রীকে ইন্টারন্যাশনাল গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ) থেকে ফোন করা হয়, যা প্রতিমন্ত্রী নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
তারাই তারানা হালিমের বাসায় কাফনের কাপড় পাঠিয়েছেন। এরা অবৈধ ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল (ভিওআইপি) ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
শুক্রবার তারানা হালিম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে আমার অফিসের টেলিফোন নম্বরে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। ফোন করে বলা হয়- অবৈধ ভিওআইপি ও অবৈধ সিমের ব্যাপারে আপনার এত লাফালাফির দরকার নেই। আপনি ধীরে চলেন। জবাবে আমি বলি, আমি ধীরে কেন চলব? আপনি কে আমাকে হুকুম দেওয়ার?’
এক প্রশ্নে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কণ্ঠ শুনে মনে হয়েছে কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি এই হুমকি দিয়েছেন। তবে হুমকিতে এসব কাজ বন্ধ হবে না। আর আমি বিক্রি হওয়ার মতো কেউ না।’ এর আগে গত বুধবারও টেলিফোনে হুমকি দেওয়া হয়েছে তাকে।
মোবাইল সিম পুনঃনিবন্ধনের উদ্যোগ নেওয়ায় তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিমন্ত্রী ধারণা করছেন।
গুলশান থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সিরাজুল ইসলাম আজ বিকেলে বলেন, ‘আমি প্রতিমন্ত্রীর কাছে যাব। কোন নম্বর থেকে ফোন করা হয়েছে- তা জানব। আর বাসার সামনে কারা কাফনের কাপড় দিয়ে গেছে তা নিশ্চিত হতে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
গুলশান থানা সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পর প্রতিমন্ত্রীর বাসার পাশের তিনতলা ভবনের ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে তদন্ত করে দেখা হয়েছে। তবে ফুটেজে স্পষ্ট করে কিছু দেখা যায়নি। এ ছাড়া পুলিশের পক্ষ থেকে যে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে, সেখানেও মোটরসাইকেল আরোহী কে তা বোঝা যাচ্ছে না। কিংবা কে উপহার বক্সটি রেখে গেছে- বাসার দারোয়ানও সেই ব্যাপারে কিছু বলতে পারেনি। শুধু জানিয়েছেন, একজন যুবক এসেছিল।
বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়রের নাম ব্যবহার করে নববর্ষের ‘গিফট বক্সে’ কাফনের কাপড় পাঠিয়ে তারানা হালিমকে হুমকি দেওয়া হয়েছে। বক্সের ভেতরে কাগজে লেখা ছিল, ‘এবার তোর পালা, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হ।’ মোটরসাইকেলে একজন এসে বাসার দারোয়ানকে প্যাকেটটি দিয়ে যায়।
একটি গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, আইজিডব্লিউ থেকে যে কলটি করা হয়েছে, এটি অবৈধ ভিওআইপির মাধ্যমে করা হয়ে থাকতে পারে। যে দেশ থেকে কল করা হয়েছে, সেখানেই নম্বরটি সীমাবদ্ধ থাকে। অন্য দেশ থেকে নম্বর বের করা কঠিন। এদেশে কারা অবৈধ ভিওআইপির ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, তাদের একটি তালিকা করা হয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর নামও বেরিয়ে এসেছে। যাদের নাম বিভিন্ন সময় র‌্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা স্বীকার করেছে।
সূত্রটি জানায়, অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এরা তথ্য-প্রযুক্তিতে পারদর্শী। এদের সঙ্গে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির অসাধু কর্মকর্তাদের সখ্যতা রয়েছে। যতগুলো অবৈধ ভিওআইপির সন্ধান মিলেছে, তার সবকটিতে বেসরকারি মোবাইল কোম্পানির অনিবন্ধিত সিম ব্যবহার করা হয়েছে। এরাই নিজেদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার স্বার্থে হুমকি-ধামকি বা নানা কৌশলে সিম নিবন্ধন বন্ধ করার চেষ্টা করছেন। প্রতিটি সিম নিবন্ধন করা হলে তাদের ব্যবসাও বন্ধ হয়ে যাবে।