খোলা বাজার২৪, রবিবার, ১৭ এপ্রিল ২০১৬: পালিয়ে বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করায় ফেনীতে এক মাদ্রাসাছাত্রকে ‘ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে নির্যাতন ও ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পেটানোর’ অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
ফেনী সদর হাসপতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রের অভিযোগ, মারধরের পর তাকে বাথরুমেও আটকে রাখা হয়েছিল।
শুক্রবার দুপুরে শহরের মধ্যম চাড়িপুর মিছবাহুল কোরআন ওয়াস ছুন্নাহ মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে বলে ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহীনুজ্জামান জানান।
১২ বছর বয়সী ওই শিশুর বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গাংরা ইউনিয়নে। মার্চের শেষ সপ্তাহে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগে ভর্তি হয় সে।
পরিদর্শক শাহীনুজ্জামান জানান, শনিবার রাতে শিশুটিকে ফেনী সদর হাসপতালে ভর্তি করার পর তার বাবা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
পুলিশ রাত ১০টার দিকে ওই মাদ্রাসায় অভিযান চালালেও মোশারফ হোসেন নামের সেই শিক্ষক ‘পালিয়ে যাওয়ায়’ তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
আরিফুলের বাবা সাংবাদিকদের জানান, কিছুদিন আগে তার দ্বিতীয় ছেলের জন্ম হলে মাদ্রাসাপড়ুয়া বড় ছেলে ভাইকে দেখতে বাড়ি যাওয়ার জন্য ওই শিক্ষকের কাছে ছুটির অবেদন করে।
“তিনি ছুটি দিতে রাজি না হওয়ায় শুক্রবার দুপুরে আমার ছেলে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু শিক্ষক মোশারফ তাকে ধরে ফেলে এবং আটকে নির্যাতন করে।’’
এ খবর পেয়ে শনিবার দুপুরে মাদ্রাসায় গিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করেন বলে জানান তার বাবা।
হাসপাতলে চিকিৎসাধীন শিশুটি বলে, শিক্ষক মোশারফ তাকে প্রথমে বেত ও ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে পেটান। এতে দুই হাত, দুই পা, নিতম্ব, বুক, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে কালসিটে পড়ে যায়।
“এরপর আমাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারে। নামানোর পর প্রথমে একটা বাথরুমে আর পরে মাদ্রাসার একটা ঘরে আটকে রাখে।”
ফেনী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার (ইএমও) সঞ্জয় কুমার পাল বলেন, “শিশুটির শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের কারণে জখম হয়েছে। বিভিন্ন অংশে রক্ত জমে গেছে।”
পুলিশ পলাতক শিক্ষক মোশারফ হোসেনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে বলে পরিদর্শক শাহীনুজ্জামান জানান।