খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৮ এপ্রিল ২০১৬: চাকরিটা ছেড়ে দেবেন বলে মনস্থির করেছেন? তাহলে একটা ভালো মানের পদত্যাগপত্র লেখা প্রয়োজন। কাজটাকে বেশ অপ্রয়োজনীয় বলেই মনে হতে পারে। চাকরি ছাড়ার সময় এইচআর ম্যানেজার তা না চাইলেও করপোরেট নিয়ম অনুযায়ী প্রদান করা উচিত। তা ছাড়া ভবিষ্যৎ চাকরিতে আগের চাকরিদাতার একটি ভালো রেফারেন্স পেলে মন্দ হয় না। তাই একটি চমৎকার রেজিগনেশন লেটারের মাধ্যমে আপনি সুসম্পর্ক বজায় রেখে চাকরি ছাড়তে পারেন। এখানে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভালো ইস্তফাপত্র লেখার কিছু নিয়ম।
১. পত্রে যা থাকবে : পদত্যাগপত্রের ভাষা সরল এবং পরিষ্কার হওয়া উচিত। মনস্টার-এর ক্যারিয়ার এক্সপার্ট ভিকি সালেমি জানান, মৌলিক কিছু তথ্য এতে যোগ করতে হবে। এগুলো হলো :
ক. যে তারিখে চিঠিটি জমা দিচ্ছেন।
খ. পদত্যাগ করার একটি আনুষ্ঠানিক বক্তব্য।
গ. যে তারিখ থেকে কাজ ছাড়তে চান।
ঘ. আপনার স্বাক্ষর।
এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার জন্যে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা উচিত। কর্তৃপক্ষ ও আপনার বসকে ধন্যবাদ জানাবেন। বিশেষজ্ঞ জেনিস ইলিয়ট-হাওয়ার্ড জানান, যে প্রতিষ্ঠান ছাড়ছেন তারা যেন মনে না করে যে আপনি এখানে সময়ের অপচয় করেছেন বলে ভাবছেন। অফিস ও কর্মী-কর্মকর্তাদের প্রশংসা করে চিঠি লেখার পরামর্শ দিয়েছেন রিজ্যুমি ডেইলি’র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যালেক্স টুয়েরস্কি। এমনকি আপনার স্থানে নতুন যে আসছেন, তাকে কাজ বুঝিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবনাও রাখতে পারেন।
২. যে বিষয়গুলো এড়িয়ে যাবেন : পেশাদার হিসাবে কিছু বিষয়ে এ চিঠিতে এড়িয়ে যেতে হবে। পদত্যাগপত্র প্রতিষ্ঠান সংরক্ষণ করে রাখে ভবিষ্যতের কর্মীদের জন্যে। কাজেই এর ভাষা ভদ্রোচিত ও সহজ হওয়া উচিত। বিশেষজ্ঞ রবার্ট হাফের এক জরিপে বলা হয়, ৮৬ শতাংশ হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজার মনে করেন, যে উপায়ে কর্মীরা চাকরি ছাড়েন তার ওপর ওই কর্মীর ভবিষ্যৎ অনেকটা নির্ভর করে। বিষয়টা মাথায় রেখে কয়েকটি অংশ এড়িয়ে যেতে হবে। যেমন :
ক. বিশেষজ্ঞদের মতে, চাকরি ছাড়ার কঠিন কোনো কারণ না বলাই ভালো। হতে পারে অস্বস্তিকর কোনো কারণে চাকরি ছাড়ছেন। এটা না উল্লেখ করাই ভালো। হয়তো বেতন বাড়ছে না বা অফিস বাসা থেকে দূরে হয়ে যায় বা কোনো অভিমান আছে মনে। নেতিবাচক বিষয় থাকলে তা এড়িয়ে যান।
খ. চাকরির কোনো একটি বিষয়কে হয়তো ঘৃণা করেন। বসের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক, কোনো সহকর্মীর সঙ্গে ঘটে যাওয়া সমস্যা বা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বনিবনা না হওয়া ইত্যাদি কারণ থাকতেই পারে। অথবা আরো ভালো সুযোগ পেয়েছেন। সুযোগের সদ্ব্যবহার সবাই করেন। কিন্তু যে বিষয়গুলোকে আপনি ঘৃণা করেন বা অসহ্যকর মনে হয়, সেগুলো চিঠিতে দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
গ. চিঠির ভাষা অবশ্যই শান্ত ও পেশাদার হতে হবে। সেখানে আবেগের তীব্র প্রকাশ থাকবে না। আগ্রাসী বা কাঁদুনে টাইপের বক্তব্য দেওয়া বড় ধরনের ভুল। পাশাপাশি কোনো বিষয়ে ব্যক্তিগত মতামত হিসাবে কোনো মন্তব্য করা উচিত নয়।
৩. লেটার টেমপ্লেট : বিশেষজ্ঞরা আদর্শ পদত্যাগপত্রের নানা নমুনা তুলে ধরেন। ইন্টারনেট থেকে একটি ফরমেট নিতে পারেন। কি কি যোগ হবে এবং হবে না, তার পরামর্শ আগেই দেওয়া হয়েছে। শুধু মনে রাখবেন, চাকরি ছাড়ার সঠিক কারণ যে তুলে ধরতেই হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। স্বল্প ভাষায় বক্তব্য পেশ করুন। আর অবশ্যই চিঠি লিখে তা বার বার দেখে নিন।
সূত্র : বিজনেস নিউজ ডেইলি