খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২১ এপ্রিল ২০১৬: নৌযান শ্রমিকদের ডাকা অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে দেশের নদী বন্দরগুলো।
মজুরি বাড়ানোসহ ১৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ও বাংলাদেশ জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের ডাকে বুধবার রাত ১২টা থেকে শুরু হয়েছে এই ধর্মঘট।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম জানিয়েছেন, ঢাকার সদরঘাট থেকে কোনো রুটেই কোনো নৌযান চলাচল করছে না।
রাত ১২টা থেকে যাত্রীবাহী ও মালবাহী জাহাজ চলাচলও বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জাহাজী শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ জানিয়েছেন।
চাঁদপুর ও বরিশালসহ সংশ্লিষ্ট জেলাগুলো থেকে প্রতিনিধিরাও ধর্মঘটের কারণে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে ঘাটে লঞ্চ না থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। বিকল্প পথে গন্তব্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে হচ্ছে তাদের।
যাত্রীবাহী, পণ্যবাহী, কোস্টার, ট্যাংকার, বালুবাহী নৌযান, ড্রেজার, শ্যালো ট্যাংকারসহ সব ধরনের নৌযানের শ্রমিকরা এই কর্মবিরতিতে অংশ নিচ্ছেন বলে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
নৌ-শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকারি কর্মচারীদের মতো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া, নৌ-পথে অবৈধ চাঁদাবাজি ও অবৈধ ইজারা বন্ধ করা, প্রত্যেক শ্রমিককে নিয়োগপত্র ও সার্ভিস বুক দেওয়া, নৌযান শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কর্মস্থলে আহত শ্রমিকের চিকিৎসা ব্যয় ও চিকিৎসাকালে বেতনের দাবি রয়েছে আন্দোলনকারীদের ১৫ দফার মধ্যে।
এসব দাবিতে গত এক বছরে কয়েক দফা ধর্মঘটের কর্মসূচি দিলেও সরকারের আশ্বাসে পরে আন্দোলন স্থগিত করে শ্রমিক সংগঠনগুলো।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাহ আলম বলেন, “আমাদের শ্রমিকরা বর্তমানে ৪ হাজার ১০০ টাকা বেতন পায়। আমরা চাইছি, বর্তমান বাজারদর ও আনুষঙ্গিক খরচ বিবেচনা করে তা ৮ হাজার ২৫০ টাকা করা হোক।”
২৬ জানুয়ারি নৌমন্ত্রী শাজাহান খানের সঙ্গে এ বিষয়ে বৈঠক করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “তিনি তখন আমাদের একমাস সময় দিতে বলেছিলেন। কিন্তু আজ আমরা মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেখানে সমঝোতা না হওয়ায় এই কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি।”
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত নৌযান শ্রমিকদের এই কর্মবিরতি ‘চলবে’ বলে জানান শাহ আলম।
চাঁদপুর প্রতিনিধি জানান, নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে চাঁদপুর নৌ-বন্দরে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
চাঁদপুর থেকে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, বরিশাল, খুলনা, ভোলাসহ কোনো রুটের কোনো লঞ্চ সকাল থেকে ছেড়ে যায়নি।আগে থেকে জানা না থাকায় যাত্রীদের সকালে ঘাটে এসে লঞ্চ না পেয়ে ফিরে যেতে দেখা যায় বলে জানান তিনি।
বরিশাল প্রতিনিধি জানান, বরিশাল নৌ বন্দরেও রাত ১২টা থেকে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ধর্মঘটের সমর্থনে বৃহস্পতিবার সকালে নৌ বন্দরে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের বরিশাল শাখার সভাপতি শেখ আ. হাশেম জানান, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সহযোগী হিসেবে তারাও এ আন্দোলনে যুক্ত।
বরিশাল নৌ বন্দরের কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বরিশাল থেকে দূরপাল্লা ও অভ্যন্তরীণ রুটের সব ধরনের নৌযান চলাচলই বন্ধ রেখেছে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।