খোলা বাজার২৪,শুক্রবার, ২২ এপ্রিল ২০১৬: প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ চক্রান্তের মামলায় শফিক রেহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
প্রথম দফায় পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে শুক্রবার শফিক রেহমানকে ঢাকার হাকিম আদালতে হাজির করে আরও সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার হাসান আরাফাত।
শুনানি শেষে মহানগর হাকিম মাহমুদুর হাসান পাঁচ দিনের হেফাজত মঞ্জুর করেন বলে আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক জালাল আহমেদ জানান।
তিনি বলেন, “শফিক রেহমানের বাসা থেকে এফবি আইয়ের নথি উদ্ধারের কথা জানিয়ে রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, উনি জয়কে অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্র করছিলেন। কোন কোন বিএনপি নেতা ওই ষড়যন্ত্রে জড়িত- তা জানতে তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।”
জয় সম্পর্কিত তথ্য পাওয়ার জন্য এক এফবি আই এজেন্টকে ঘুষ দেওয়ার অপরাধে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী জাসাস নেতা মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের ছেলে রিজভী আহমেদ সিজারের কারাদণ্ড হয়।
মার্কিন আদালতে প্রসিকিউশনের নথিতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ছেলেকে ‘অপহরণ, ভয় দেখানো ও ক্ষতি করাই’ ছিল তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্য। সিজার কিছু তথ্য বাংলাদেশি ‘একজন সাংবাদিককে’ সরবরাহ করেছিলেন এবং বিনিময়ে ‘প্রায় ৩০ হাজার ডলার’ও পেয়েছিলেন বলেও সেখানে উল্লখ করা হয়।
ওই ঘটনাটি নিয়ে ২০১৫ সালের ৩১ মে ঢাকার পল্টন থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে পুলিশ, যা পরে মামলায় রূপান্তরিত হয়। ওই মামলাতেই গত ১৬ এপ্রিল শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।
ওই রিমান্ড চলার মধ্যেই গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম দাবি করেন, সজীব ওয়াজেদ জয় সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সংরক্ষিত তথ্য পেতে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় দণ্ডিতদের সঙ্গে ‘একাধিক বৈঠকের কথা’ শফিক রেহমান ‘স্বীকার করেছেন’।
ওইদিনই শফিক রেহমানকে সঙ্গে নিয়ে তার ইস্কাটনের বাসায় তল্লাশি চালানোর কথা জানায় পুলিশ।
মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ কমিশনার মাশরুকুর রহমান খালেদ পরে বলেন, “সেখানে শফিক রেহমানের নিজের হেফাজতে রাখা সজীব ওয়াজেদ জয় সংক্রান্ত প্রাথমিক কিছু তথ্য, বাড়ি, গাড়ির নম্বর, কোথায় থাকেন, এসবৃ আর গোপনীয় কিছু নথিপত্র পাওয়া গেছে। তিনি এসব সংরক্ষণ করে রেখেছিলেন। গোয়েন্দারা এগুলো জব্দ করেছে।”
গত শতকের ৮০ এর দশকে সাপ্তাহিক যায়যায়দিন সম্পাদনার মধ্য দিয়ে ব্যাপক পরিচিতি পাওয়া শফিক রেহমানের সঙ্গে পরে বিএনপির ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, সরকারের ‘নোংরা’ কূটকৌশলের অংশ হিসেবে শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রীর ছেলে জয় বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে সরাসরি তথ্য পেয়েই শফিক রেহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।