Sat. Mar 15th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

43খোলা বাজার২৪: এপ্রিল ২৩, ২০১৬, শনিবার
পাবনার চাটমোহরে ভোট গণনা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে গ্রামবাসীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ইমদাদুল হক (৫২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন অন্তত ১০ জন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চাটমোহরের মথুরাপুর ইউনিয়নের বাহাদুরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গণনা চলছিল। গণনা শেষ হওয়ার আগেই সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে একদল যুবক কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এ সময় দায়িত্বরত কর্মকর্তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে খবর দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের একটি গাড়িবহর নিয়ে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন।
বিজিবি সদস্যরা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সঙ্গে যোগ দিয়ে উপস্থিত লোকজনকে কেন্দ্র থেকে সরে যেতে বলেন। এতে লোকজন উত্তেজিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা লাঠিপেটা শুরু করেন। এর মধ্যেই স্থানীয় মসজিদের মাইক থেকে গ্রামবাসীর ওপর হামলা হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। এতে গ্রামের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ওপর হামলা করেন। তখন ইটের আঘাতে একজন বিজিবি সদস্য আহত হন। শুরু হয় সংঘর্ষ।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন ইমদাদুল হক। আহত হন অন্তত ১০ জন। ইমদাদুলকে উদ্ধার করে চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মো. সালাউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ইমদাদুলের পিঠে গুলি লেগেছে।
গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, ইমদাদুল হক পেশায় তালা মেরামত করতেন। তাঁর বাড়ি ভোট কেন্দ্রটির পাশেই। ঘটনার সময় তিনি উৎসুক জনতার সঙ্গে পরিস্থিতি দেখছিলেন। এ সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বলেন, আহত কেউ হাসপাতালে যেতে সাহস করছেন না। তাঁরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সংঘর্ষ ও গুলির বিষয়টি নিশ্চিত করে পাবনার পুলিশ সুপার আলমগীর কবীর বলেন, ভোট গণনার শেষ পর্যায়ে এক সদস্য প্রার্থী পুনরায় ভোট গণনার দাবি তুলেছিলেন। এ নিয়েই দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওই সদস্য প্রার্থীর সমর্থকদের কথা-কাটাকাটি হয়। শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পেরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি ছোড়েন। তবে কার গুলিতে ওই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন—তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।