Fri. Mar 14th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

1খোলা বাজার২৪, রবিবার, ২৪ এপ্রিল ২০১৬: নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, দফায় দফায় সংঘর্ষ ও বিএনপির তিন চেয়ারম্যান প্রার্থীর নির্বাচন বর্জনের মধ্য দিয়ে ভোট সম্পন্ন হয়েছে। সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ জন।
শেষে ভোটকেন্দ্রে ফলাফল ঘোষণা না করাকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষে বিজিবির এক সদস্য গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। এ সময় উত্তেজিত জনতা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকারিয়া হোসেনের ব্যবহৃত গাড়িসহ পুলিশের তিনটি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক ফাঁকা গুলি ছোড়ে। রাত সাড়ে আটটায় উপজেলার চারিতালুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, নির্বাচন শেষে ব্যালট পেপার গণনা শেষ হলেও রহস্যজনক কারণে চারিতালুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে দায়িত্বরত প্রিসাইডিং অফিসার মনিরুজ্জামান তা গোপন রাখেন। এখানকার সব কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হলেও এ কেন্দ্রের ভোটের পার্থক্য ঘোষণা করা হয়নি। স্থানীয় সদস্য প্রার্থী এবং তাঁদের সমর্থিত লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানসহ প্রশাসনের লোকজনকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এ সময় পুলিশ গ্রামবাসীকে ধাওয়া করলে সংঘর্ষে রূপ নেয়।
সরেজমিনে এবং বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কায়েতপাড়া ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। গত শুক্রবার রাত ১২টার দিকে স্থানীয় সাংসদ গাজী গোলাম দস্তগীরের (বীরপ্রতীক) সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) নাফিজ শিকদারসহ ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একদল কর্মী-সমর্থক মুড়াপাড়া ইউপিতে মঙ্গলখালী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল জব্বারের সমর্থকেরা নাফিজকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন ও তাঁকে কেন্দ্রের ভেতর অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।
গতকাল ভোট শুরুর পরপরই মুড়াপাড়ার মঙ্গলখালী কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে ২০ জন আহত হন। ভোলাব ইউপির পাইস্কা-বাসুন্দা কেন্দ্র থেকে ভোটারদের তাড়িয়ে দিয়ে কেন্দ্র দখলের অভিযোগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শেখ সাইফুল ও তাঁর স্ত্রী চম্পা আক্তারকে অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকদের সঙ্গে বিএনপির প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এতে আনসার সদস্যসহ ১০ ব্যক্তি আহত হন। এ ঘটনায় কেন্দ্রটিতে প্রায় এক ঘণ্টা ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে।
উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ভোলাব শহীদ স্মৃতি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের সময় পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের তিন সদস্যসহ প্রায় ২০ জন আহত হন।
চারিতালুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুর করা হয়। সংঘর্ষে পুলিশ আনসারসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়।
ব্যাপক কারচুপি, জাল ভোট, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বেলা আড়াইটার দিকে গোলাকান্দাইল, ভুলতা ও মুড়াপাড়া ইউপিতে বিএনপির প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। শুধু ভোলাব ইউপিতে বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী আলমগীর হোসেন শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।