খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৬: বাসায় ঢুকে জুলহাস মান্নানকে চাপাতি দিয়ে কোপাচ্ছিল ঘাতকেরা। আর্তনাদ শুনে খাট থেকে নেমে আসেন ৯০ বছর বয়সী মা সখিনা খাতুন। নামতে গিয়ে খাট থেকে পড়েও যান তিনি। কিন্তু তারপরও ছেলেকে বাঁচাতে বসার ঘরে ছুটে আসেন। ঘাতকদের কাছে জানতে চান, ‘ আমার ছেলের কী অপরাধ?’
মায়ের প্রশ্নের জবাবে ঘাতকদের একজন তাঁকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছুড়ে মারে। চেয়ারের আঘাতে পড়ে যান তিনি। পায়েও আঘাত পান। এর পরে আর কিছু মনে করতে পারছেন না তিনি।
অবসরপ্রাপ্ত এই শিক্ষিকার এখন একটাই জিজ্ঞাসা ছেলে আছে কোথায়? ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনলে শোক সহ্য করতে পারবেন কি না, সে কারণে পরিবার থেকে বলা হয়েছে ছেলেকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গের সামনে গণমাধ্যমকে এসব কথা জানালেন রাজধানীর কলাবাগানে খুন হওয়া জুলহাজ মান্নানের চাচা আমিনুল হোসেন। ভাতিজা জুলহাসের লাশ নিতে গতকাল মর্গে এসেছেন তিনি। লাশের ময়নাতদন্ত হলেই লাশ নিয়ে প্রথমে কলাবাগানের বাসায়- এরপর বনানী কবরস্থানে জুলহাসের লাশ দাফন করার কথা রয়েছে বলে জানান তিনি।
কলাবাগানে দুজনকে হত্যার ঘটনায় মামলা
আমিনুল হোসেন বলেন, জুলহাসের মায়ের মানসিক অবস্থা ভালো নয়। বয়সও অনেক। সবকিছু মনেও রাখতে পারছেন না তিনি। তাঁকে জুলহাজের বড় ভাই ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কর্মকর্তা মিনহাজ মান্নানের গুলশানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, তাঁদের বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায়। সখিনা খাতুন চাঁদপুরে ও ঢাকায় রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন। জুলহাসের বোন রুমানা যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনি দেশে ফিরছেন। তবে লাশ হিমাগারে রাখা হবে না। আজই দাফন করার কথা ভাবা হচ্ছে।
একই ঘটনায় নিহত মাহবুব তনয়ের লাশও ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রাখা আছে। এখনো কোনো স্বজন সেখানে আসেননি। তবে শেওড়াপাড়ায় তনয়ের বাসার আশপাশের প্রতিবেশী কয়েকজন ছোট ভাই মর্গে এসেছেন। তাঁরা বলেন, তনয় ভাই এলাকায় সেভাবে কারও সঙ্গে তেমন মিশতেন না। তাঁরা মর্গে লাশ আছে শুনে এসেছেন। তনয় ভাই ঢাকায় মা-বোনের সঙ্গে শেওড়াপাড়ার বাসায় থাকতেন।