Sun. May 4th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

17খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৬:  জুলহাজ ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বীকে কুপিয়ে হত্যা করার পর ফিল্মি স্টাইলে পিস্তল উঁচিয়ে সবাইকে ভয় দেখিয়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করে দুর্বত্তরা।
মঙ্গলবার বিকেলে কলাবাগানেরর ব্যবসায়ী রোকন এন্টার প্রাইজের মালিক রোকন মিয়া বলেন, ‘৫ জন যুবক পিস্তল উঁচিয়ে সবাইকে ভয় দেখাতে দেখাতে হাঁটতে থাকে রাস্তা দিয়ে। আমরা তখনও জানতাম না তারা একটি হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘৫ জনের মধ্যে ২ জন সামনে এবং ৩ জন পিছনে এবং সবার সাথেই একটি করে ব্যাগ ছিল। সামনে থাকা ব্যক্তি পিস্তল ঘুরিয়ে সবাইকে ভয় দেখাচ্ছিল আর বাকি ৪ জনের হাত ছিল তাদের ব্যাগে। হতে পারে তাদের ব্যাগেও পিস্তল ছিল।’
রোকন বলেন, ‘তারা স্বাভাবিকভাবেই হাঁটছিল। এরপর পেছন থেকে একজন ডাকাত বলে তাদের জন্য ইট নিলে তারা তাকে গুলি করতে পিস্তল ঘুরায়। এরপর আর কেউ সাহস করেনি।’
এদিকে দুর্বত্তরা চাপাতি দিয়ে কোপানোর পরেও জুলহাজ কয়েক মিনিট বেঁচে ছিলেন বলে দাবি করেছেন বেনজির নামের তার পাশের বাড়ির এক প্রতিবেশি।
বেনজির বলেন, ‘আছরের নামাজ পড়ে বসলাম, ঠিক এমন সময়েই পাশের বাসায় বাঁচাও, বাচাও বলে চিৎকার শুনতে পাই। এরপর যেয়ে দেখি ২টি ক্ষত-বিক্ষত দেহ পড়ে আছে সেখানে।’
তিনি বলেন, ‘দরজার সাথে ছিল জুলহাজ সাহেবের ক্ষত-বিক্ষত দেহ। একটু ভেতরেই ছিল তার বন্ধুর মরদেহ। জুলহাজ সাহেবের মা তখন আর্তনাদ করছিল, আমার ছেলে বেঁচে আছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে চল।’
প্রথমে উপস্থিত সবাই ভয়ে জুলহাজের ক্ষত-বিক্ষত দেহ স্পর্শ করেনি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জুলহাজ সাহেব তখনও বেঁচে ছিলেন, তার হাত-পা নড়ছিল তখন।’
তিনি জানান, জুলহাজ এবং তার বন্ধু মাহবুব রাব্বীর চিৎকার শুনেও প্রথমে এগিয়ে আসেননি কেউই। তাদের কুপিয়ে চলে যাওয়ার পরেও ওই ভবনের উপর এবং নিচ তলা থেকে কেউ আসছিল না ভয়ে।
তিনি বলেন, ‘এর আগে দারোয়ান রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে ফ্ল্যাটের দরজার সাথে। এরপর আমরা তাকে হাসপাতালে পাঠাই।’
বেনজির জানান, সবাই প্রথমে মনে করেছিল ওই ভবনে ডাকাত ঢুকেছে। তাই ভয়ে কেউই যায়নি প্রথমে। এরপর ডাকাত চলে গেছে শুনে সবাই যেতে থাকেন ওই ফ্ল্যাটে।
উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার বিকেলে রাজধানীর কলাবাগানের ৩৫/এ আছিয়া নিবাসের বাসায় ঢুকে সমকামীদের অধিকার–বিষয়ক সাময়িকী ‘রূপবান’ র সম্পাদক জুলহাজ ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়কে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় দুর্বত্তরা।