খোলা বাজার২৪,বৃহস্পতিবার, ২৮ এপ্রিল ২০১৬: মহামূল্যবান এ চা প্রস্তুতকারক ডা হং পাও নামে একটি প্রতিষ্ঠান। নির্মাতারা জানাচ্ছেন, এটি কোনোসাধারণ চা নয়। কারণ এ চায়ের রয়েছে দেড় হাজার বছরের ঐতিহ্য।
২০০২ সালে চীনের ঐতিহ্যবাহী এ চায়ের মাত্র ২০ গ্রাম বিক্রি হয় ২৮ হাজার ডলারে। প্রায়ই এ চায়ের একটি পাত্র বিক্রি হয় ১০ হাজার ডলার মূল্যে। এ কারণে একে বিশ্বের সবচেয়ে দামি পানীয় বলা হয়।
চীনে প্রাচীন পদ্ধতির এ চা বানানো মোটেই সহজ নয়। এজন্য রয়েছেন বিশেষ কারিগর। একজন চা কারিগরের নাম শিয়াও হুই। তিনি ফুজিয়ানের একটি নদীতীরবর্তী শহর ইউয়িশানে চা বানান। তিনি বলেন, ‘এটি দেখলে মনে হবে একজন ভিক্ষুকও পান করতে পারবেন। যদিও এর দাম একজন সম্রাটের উপযোগী এবং হৃদয় বুদ্ধের উপযোগী।’
শিয়াও হুই জানান ‘ডা হং পাও’ পাতা থেকে এ চা তৈরি হয়। পাতাটি গাঢ়, জট পাকানো ও অমসৃণ দেখতে। এটি তার পারিবারিক বাগানে উৎপন্ন হয়। বহু প্রজন্ম ধরেই তারা এ কাজ করছেন। এখনও প্রতি বসন্তে তারা পাহাড় থেকে এ চায়ের উপকরণ সংগ্রহ করেন।
চীনের এ এলাকায় রয়েছে চুনাপাথর ও পাহাড়ি এলাকা। সেখানেই পাহাড়ি ঝর্ণা, জলপ্রপাত ও খনিজসমৃদ্ধ এলাকায় উৎপন্ন হয়ে থাকে দুর্লভ এ চায়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভেষজ।
‘ডা হং পাও’ নামে এই চা এত মূল্যবান হওয়ার কারণ কী? এ প্রসঙ্গে একজন স্থানীয় চা শিল্পী শিয়াংগিং উ জানান ‘আসল ডা হং পাও চা অত্যন্ত মূল্যবান কারণ এ চায়ের গাছ পাওয়া যায়না বললেই চলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ চায়ের প্রাচীন উপকরণটি সত্যিই মূল্যবান। প্রায় মহামূল্য বলা যায়।’
এ চায়ের এতই চাহিদা যে চীনের অত্যন্ত ধনীরা তাদের ব্রোকারদের এ স্থানে পাঠান চা সংগ্রহ করতে। এছাড়া তারাই এ চায়ের আগ্রহীদের মাঝে সংযোগ স্থাপন করেন।
শুধু চীনারাই এ চায়ের মূল্য দেয়, এমনটা নয়। ১৮৪৯ সালে ব্রিটিশ বোনাটিস্ট রবার্ট ফরচুন ইউয়িশানের পাহাড়ি এলাকায় এসেছিলেন গোপন মিশনে। তাকে পাঠিয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। তারপর থেকে ব্রিটিশরাও এ চায়ের ভক্ত। তবে তারা নানা চেষ্টার পরও এ চায়ের গাছ অন্যত্র লাগাতে সক্ষম হয়নি। ফলে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কখনোই করা যায়নি। ফলে মূল্য হয়ে উঠেছে আকাশচুম্বী।