Sat. Jun 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

20kখোলা বাজার২৪, শনিবার, ৩০ এপ্রিল ২০১৬: রাজধানীর সিম পুনর্নিবন্ধন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ভিড় বাড়ছে। শুক্রবার ছুটির দিনে সকাল থেকে কেন্দ্রগুলোতে ছিল উপড়ে পড়া ভিড়। সিম নিবন্ধনের জন্য আসা ব্যক্তিদের সামাল দিতে হিমশিম অবস্থা কেন্দ্রের গ্রাহক ব্যবস্থাপকদের। গ্রাহকদের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে আজ সকালে কয়েক ঘণ্টার জন্য মূল ‘সার্ভার ডাউন’ হয়ে যায়। ফলে নিবন্ধনের কাজে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ধীর গতি দেখা যায়। তবে কেন্দ্রগুলোতে কাজ বন্ধ ছিল না। সার্ভারের ধীর গতির সময় ফরমপূরণসহ অন্যান্য কাজগুলো চলেছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়ন (এনআইডি) কাজের সঙ্গে যুক্ত নির্বাচন কমিশনের একজন উপসচিব প্রথম আলোকে বলেন, সার্ভার ডাউন নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার পর তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন এনআইডি সার্ভার ঠিকই আছে। তাঁর মতে সম্ভবত মোবাইল ফোন অপারেটরদের সার্ভারে সমস্যা আছে। ওই সার্ভারগুলো ডাউন থাকায় সমস্যা হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে সাংবাদিকদের কাছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছেন, ‘সার্ভার ডাউন হওয়ায় রাজধানীতে কয়েক ঘণ্টার জন্য সিম নিবন্ধনে যে সমস্যা হয়েছিল তা এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) সার্ভার ডাউনের কারণে নয়। সমস্যা মোবাইল অপারেটরদের কি না তা দেখতে হবে। আমি কথা বলেছি, এনআইডি সার্ভার ডাউন না।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কিছু সিম ঝড়ে পড়বে। ৯-১০ কোটি সিম নিবন্ধন হলে সরকারের লক্ষ্য পূরণ হবে। তিনি বলেন, সেই সিমগুলো ঝড়ে পড়বে সেগুলো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য বা অবৈধ ভিআইপি কাজের জন্য বা জঙ্গি অর্থায়নে ব্যবহার করা হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশে আট কোটি ৩৮ লাখ সিম পুনর্নিবন্ধনের কাজ শেষ হয়েছে। মোবাইল অপারেটররা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত সারা দেশে মোট সিম বিক্রি করা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি ১০ লাখ।
অর্থাৎ এখনো প্রায় ৫ কোটি সিমের নিবন্ধন বাকি আছে। কাল সময় বাড়ানো না হলে কাল শনিবার রাত ১০টা পর্যন্ত সিম নিবন্ধন করা যাবে। যেসব সিম নিবন্ধন হবে না সেগুলো পয়লা মে তিন ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে বলে মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে। সূত্র জানিয়েছে, এই বন্ধ রাখার উদ্দেশ্য হলো গ্রাহককে জানানো যে, সিমটি নিবন্ধন করা হয়নি। এরপর একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিমটি নিবন্ধন করা না হলে তা স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। অবশ্য প্রবাসীরা ১৮ মাস পর্যন্ত সিম নিবন্ধনের সময় পাবেন।
দুটি মোবাইল ফোন অপারেটরের দায়িত্বশীল দুজন কর্মকর্তা বলেছেন, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টা সার্ভার ডাউন ছিল। তবে তাদের দাবি এই সময়ের মধ্যে কাজ একেবারেই বন্ধ ছিল না। ধীর গতিতে হলেও কাজ চলেছে। মোবাইল ফোন অপারেটর ‘রবি’র মুখপাত্র ইকরাম কবীর বলেন, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সার্ভার ডাউন ছিল। তবে এই সময়ের মধ্যে রবি’র প্রায় সাড়ে তিন লাখ সিম নিবন্ধনের কাজ হয়েছে। তিনি বলেন, দুই দিনে তাদের সাত লাখের বেশি সিম নিবন্ধন কাজ হয়েছে।
আজ সকালে রাজধানীর তেজগাঁও, মগবাজার ও ফার্মগেট ও শাহবাগ এলাকার কয়েকটি নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়ে সাধারণ মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। নিকেতনের বাসিন্দা সোলায়মান হোসেন বললেন, নিবন্ধন শেষ হতে অনেক সময় লেগেছে। লম্বা লাইন ছিল। তারপর সার্ভার ডাউনের কারণে তথ্য নাকি মেলানো যাচ্ছিল না। কয়েকবার পিন কোড দেওয়ার পর নিবন্ধন শেষ হয়েছে।
ওই কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আবদুল্লাহ আল রোবায়েত বললেন, শেষ মুহূর্তে মানুষের ভিড় বাড়ছে। কাল শনিবার নিবন্ধনের সময় শেষ হবে। তাঁর মতে সাধারণ মানুষ আদালতের রায়ের অপেক্ষায় ছিল। গত ১২ এপ্রিল রায় ঘোষণার পর থেকেই নিবন্ধন কেন্দ্রে আসা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
দুপুরের পর ফার্মগেটে একটি মোবাইল ফোন অপারেটররা কাস্টমার কেয়ার সেন্টারে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেল। সেখানেও প্রচুর মানুষের ভিড়। তবে সার্ভার ঠিক হওয়ায় ততক্ষণে নিবন্ধনের গতি বেড়েছে। সময়ও বেশি লাগছে না। গ্রাহকেরা বাইরে দাঁড়িয়ে ফরম পূরণ করে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে সময় কিছুটা কম লাগছে। সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সঠিক ভাবে ফরম পূরণ হয়েছে কি না তা আগেই দেখে নিচ্ছেন।
মশিউর রহমান নামের এক ব্যক্তি বললেন, তথ্য নিয়ে নেবে এমন কথা বলা হচ্ছিল। অবশ্য এ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। যেহেতু সিম নিবন্ধন করতেই হবে, তাই চলে আসা। তিনি বলেন, বাসার চারটি সিমই তিনি নিজের নামে নিবন্ধন করেছেন। ফলে ভোগান্তি তার একার ওপর দিয়েই গেছে।
শুধু কেন্দ্রগুলোতেই নয়, টুল নিয়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লা ও সড়কের পাশে বসে সিম নিবন্ধনের কাজ করা হচ্ছে। সেখানে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, কলাবাগানের কয়েকটি দোকানেও চলছে একই কাজ।