খোলা বাজার২৪,বুধবার, ৪ মে ২০১৬: তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দেশে আগুনসন্ত্রাস, নাশকতা, গুপ্তহত্যাসহ যা কিছু ঘটছে, সবকিছুই হচ্ছে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য। তিনি অভিযোগ করেন, এর পেছনে আছেন খালেদা জিয়া ও তাঁর দল বিএনপি।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী ও জামায়াতের বিচারে বাধা কোথায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। শহীদজননী জাহানারা ইমামের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা সম্ভব। জামায়াতের বিচার করা সম্ভব। মাদ্রাসাশিক্ষা সংস্কার করা সম্ভব। দেশ থেকে জঙ্গিবাদও নির্মূল করা সম্ভব। কিন্তু এসব করতে হলে জঙ্গিবাদের উৎপাদন ও পুনরুৎপাদনকারী খালেদা জিয়াকে বর্জন করতে হবে। তাঁর বিচার করতে হবে।’
তথ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ‘আপনারা মনে করছেন, ধর্ম ও ধর্মনিরপেক্ষতার বিতর্ক তুলে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে গুপ্তহত্যা চলছে। সংস্কৃতির বিরুদ্ধে গুপ্তহত্যা চলছে। কিন্তু এসব ঘটনা ঘটানো হচ্ছে রাজনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল করার জন্য। হেফাজতের তাণ্ডবে যারা সমর্থন দিয়েছিলেন, যারা ২১ আগস্টের খুনি, যারা তিন মাস অবরোধের নামে আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছিলেন, সেই খালেদা জিয়া, বিএনপি-জামায়াত এর পেছনে জড়িত।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা কামাল লোহানী। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া অবরোধের নামে তিন মাস বাসে, গাড়িতে মানুষ পুড়িয়ে মেরেছেন। জাহানারা ইমাম যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আন্দোলন করেন, তখন খালেদা জিয়ার পুলিশ তাঁকে পেটায়। এ দেশের মানুষের দুর্ভাগ্য খালেদা জিয়া দুইবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।
ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, সিমলা চুক্তির মাধ্যমে যখন ১৯৫ জন পাকিস্তানিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়, তখন পাকিস্তান এদের বিচার করার প্রতিশ্র“তি দিয়েছিল। কিন্তু তারা সেই প্রতিশ্র“তি রক্ষা করেনি। কাজেই সেই বিচারের ভার এখন বাংলাদেশের নিতে হবে। তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের পর মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় এল, সেটা ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অসম্মানের।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল বলেন, ‘৭৫-এর পর বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উল্টো দিকে চলতে শুরু করে। এখন আর কোনো আপসকামিতা নয়। জামায়াত ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতেই হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনীর সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক আবদুর রশিদ, আইনজীবী তানিয়া আমির প্রমুখ। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লেখক-সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।