খোলা বাজার২৪,শনিবার, ৭ মে ২০১৬: এবার জাময়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামির রিভিউ আবেদন বাতিল করায় সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে নিন্দা জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিজামির মৃত্যুদ-ের রায় বহাল রাখায় উদ্বেগ প্রকাশ করে শুক্রবার একটি বিবৃতি দেয় যা পাকিস্তানের প্রভাবশালী পত্রিকা ডন প্রকাশ করে। এর আগেও মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নিন্দা জানিয়েও পাকিস্তানের আদালতে নিন্দা প্রস্তাব আনা হয়েছিল।
ডন জানায়, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, বিতর্কিত ট্রাইব্যুনাল ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে নিজামির জড়িত থাকার জন্য মৃত্যুদ-ের চূড়ান্ত রায় দিয়েছে। জামায়াতের নেতা মতিউর রহমান নিজামীর রিভিউ আবেদন খারিজ করে তার মৃত্যুদ- বহাল রাখায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিতর্কিত বিচারের সঙ্গে নিন্দা জানিয়েছে, আমরাও তাদের সঙ্গে নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
ডনের খবরে বলা হয়, সর্বোচ্চ আদালত নিজামির রিভিউ আবেদন বাতিল করায় নিজামীর রায় কার্যকর করার আর মাত্র প্রাণ ভিক্ষার পথ রয়েছে। নিজামির দলের পক্ষ থেকে তার রিভিউ আবেদন বাতিল করায় দেশব্যাপি প্রতিরোধের ডাক দেয়া হয়েছে।
আদালতের বিরুদ্ধে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করায় দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ভাটা পড়তে পারে বলেও ডনের খবরে বলা হয়। অতীতেও জামায়াতের নেতাদের মৃত্যুদ-ের রায়ে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়েছিল ঢাকা। ১৯৭১ সালের অপরাধে বিচারের রায়ে দুই দেশের সম্পর্ক চাপের মধ্যে পড়েছিল।
২০০৯ সালে হাসিনা ওয়াজেদের সরকারের গঠন করা ট্রাইব্যুনাল এই পর্যন্ত চার জন রাজনীতিবিদের মৃত্যুদ- কার্যকর করেছে তার মধ্যে অধিকাংশ জাময়াতের নেতা।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে ১৯৭৪ সালের এপ্রিলে করা বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তান এই ত্রিদেশীয় চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলা হয়, বাংলাদেশের জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সরকার যুদ্ধাপরাধের বিষয়টি সুরাহা করে গিয়েছেন। ১৯৭৪ সালের ত্রিদেশীয় চুক্তিতে ১৯৭১ সালের ঘটনা ভুলে সামনে অগ্রসর হওয়ার কথা বলেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ১৯৭৪ সালের চুক্তিটি দিল্লিতে চুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তিটিতে সই করেছিলেন বাংলাদেশ ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই চুক্তিতে ঢাকা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন যে বাংলাদেশ সরকার আর যুদ্ধাপরাধের বিচার করবে না। তাদের ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, তিনি অতীত ভুলে নতুন করে সব কিছু শুরু করতে চান। বাংলাদেশের মানুষ জানে কিভাবে ক্ষমা করে দিতে হয়।
২০০৯ সালে মিসেস ওয়াজেদ ক্ষতমতায় আসার পরে যুদ্ধাপরাধের বিচারের কাজ শুরু করেন।