Tue. Aug 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

28খোলা বাজার২৪,শনিবার, ৭ মে ২০১৬: গ্রীষ্মকালীন ফল কাঁঠাল। ফলটি খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি সহজলভ্য। দেশের সব জায়গায় এ ফল পাওয়া যায়। কাঁচা অথবা পাকা এ ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। আলসার, ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম কাঁঠাল। এমনকি বার্ধক্য প্রতিরোধ ও ডায়াবেটিস রোগীর রক্তের চিনির মাত্রা স্বাভাবিক রাখতে এ ফলের জুড়ি নেই।
কাঁঠালের গুণাগুণ
কাঁঠালের ৪-৫ কোয়া থেকে ১০০ কিলো ক্যালরি খাদ্যশক্তি পাওয়া যায়। এর হলুদ রঙের কোষ হচ্ছে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ। ২-৩ কোয়া কাঁঠাল এক দিনের ভিটামিন এ এর চাহিদা পূরণ করে। সেজন্য কাঁঠাল অপুষ্টিজনিত সমস্যা রাতকানা এবং রাতকানা থেকে অন্ধত্ব প্রতিরোধ করার জন্য খুবই উপযোগী। শিশু, কিশোর, কিশোরী এবং পূর্ণ বয়সী নারী-পুরুষ সব শ্রেণির জন্যই কাঁঠাল খুবই উপকারী ফল। গর্ভবতী এবং যে মা বুকের দুধ খাওয়ান তাদের জন্য কাঁঠাল দরকারি ফল। শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব দেখা দিলে ত্বক খসখসে হয়ে যায়। শরীরের লাবণ্য ফেরাতে কাঁঠাল বেশ উপকারী।
এ ছাড়া কাঁঠালের মধ্যে ভিটামিন ‘সি’ এবং কিছুটা ‘বি’ আছে। প্রাকৃতিকভাবে মানবদেহে ভিটামিন ‘সি’ তৈরি হয় না। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি দাঁতের মাড়িকে শক্তিশালী করে ভিটামিন ‘সি’। কাঁঠালে বিদ্যমান ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস আলসার, ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ এবং বার্ধক্য প্রতিরোধে সক্ষম।
কাঁচা কাঁঠাল আমিষ ও ভিটামিনসমৃদ্ধ তরকারি। পাকা কাঁঠালের বিচি বাদামের মতো ভেজে যেমন খাওয়া যায়, তেমনি তরকারি হিসেবেও খাওয়া যায়। ১০০ গ্রাম কাঁঠালের বিচিতে ৬.৬ গ্রাম আমিষ আছে ও ২৫.৮ গ্রাম শর্করা আছে। সবার জন্যই আমিষসমৃদ্ধ কাঁঠালের বিচি উপকারী। এজন্য কাঁঠালগাছ বেশি লাগানো উচিত। সেই সঙ্গে কাঁঠাল ফলটি খেয়ে ভিটামিন ‘এ’- এর ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে আমিষ, শর্করা ও ভিটামিন থাকায় তা মানবদেহের জন্য বিশেষ উপকারী। কাঁঠালে চর্বির পরিমাণ নিতান্ত কম। এই ফল খাওয়ার কারণে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কা কম। কাঁঠালে পটাশিয়ামের উৎকৃষ্ট উৎস। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে পটাশিয়ামের পরিমাণ ৩০৩ মিলিগ্রাম—যা পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। এ জন্য কাঁঠালে উচ্চ রক্তচাপের উপশম হয়। সর্দি-কাশি রোগের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে কাঁঠাল। টেনশন, বদহজম রোধ এবং নার্ভাসনেস কমাতে কাঁঠাল বেশ কার্যকরী।
এ গাছের শেকড় হাঁপানি রোগের উপশম করে। শেকড় সেদ্ধ করলে যে উৎকৃষ্ট পুষ্টি উপাদান নিষ্কাশিত হয়, তা হাঁপানির প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম। চর্মরোগের সমস্যা সমাধানেও কাঁঠালের শেকড় কার্যকরী। জ্বর এবং ডায়রিয়া নিরাময় করে কাঁঠালের শেকড়।
কাঁঠালে আছে বিপুল পরিমাণে খনিজ উপাদান ম্যাঙ্গানিজ, যা রক্তে শর্করা বা চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কাঁঠালে বিদ্যমান ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়ামের মতো হাড়ের গঠন ও হাড় শক্তিশালী করতে ভূমিকা পালন করে। কাঁঠালে আছে ভিটামিন বি৬, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। কাঁঠালে বিদ্যমান ক্যালসিয়াম কেবল হাড়ের জন্য উপকারীই নয়, রক্ত সংকোচন প্রক্রিয়া সমাধানেও ভূমিকা রাখে।
ছয় মাস বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে কাঁঠালের রস খাওয়ালে শিশুর ক্ষুধা নিবারণ হয়। প্রতিদিন ২০০ গ্রাম তাজা পাকা কাঁঠাল খেলে গর্ভবতী মহিলা ও তার গর্ভধারণকৃত শিশুর সব ধরনের পুষ্টির অভাব দূর হয়। গর্ভবতী মহিলারা কাঁঠাল খেলে স্বাস্থ্য স্বাভাবিক থাকে, গর্ভস্থ সন্তানের বৃদ্ধি স্বাভাবিক হয় এবং মাতৃদুগ্ধের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

অন্যরকম