খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১১ মে ২০১৬: ঢাকায় থাকলে সিনেমা দেখা হয় না। কিন্তু আমি যখন বিমানে থাকি তখন অনেক সিনেমা দেখি। আমাদের দেশের অনেক সিনেমা খুবই জীবন নির্ভর। দেশের অভিনেতা-অভিনেত্রীদের অভিনয় আমাকে মুগ্ধ করে। এমনকি শিশু শিল্পীরাও দারুণ অভিনয় করে।’— রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বুধবার বিকেলে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৪’ প্রদান অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বক্তব্যের আগে ২৬টি শাখায় নির্বাচিতের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বর্তমান অন্যদেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে চলচ্চিত্র শিল্পে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে ও চলচ্চিত্র নির্মাণে আরো যত্মশীল হতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাকিস্তানিরা কখনো ভাবেনি বাঙালিরা চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারবে। কিন্তু আমরা তা পেরেছি। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই শিল্পের উন্নয়নের জন্য এফডিসি, সেন্সর বোর্ড, নীতিমালা তৈরি করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘কিছুদিন আগেও আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসনে চলচ্চিত্র শিল্প হারাতে বসেছিল। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসে তখন এই শিল্পের অবস্থা খুবই করুণ ছিল। এরপর আমরা নীতিমালা, অনুদান ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে ধীরে ধীরে উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চলচ্চিত্রের উন্নয়নে ১০৫ একর জমির ওপর বঙ্গবন্ধু ফিল্ম সিটি তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ তৈরির পাশাপাশি উন্নত আর্কাইভ প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে।’
চলচ্চিত্র খাতের উন্নয়নের জন্য নতুন নীতিমালা তৈরি হয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘কিছুদিনের মধ্যেই তা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। এরপর সবার মতামত নিয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।’
অনুষ্ঠানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের কুশলাদি জিজ্ঞাসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
পুরস্কার বিতরণী শেষে রিয়াজ ও নওশীনের সঞ্চালনায় সাংস্কৃতিক আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রিয় তারকারা।
জাতীয় পুরস্কারের এবারের আসরের শুরুতেই আজীবন সম্মাননা পুরস্কার পেলেন সৈয়দ হাসান ইমাম ও রাণী সরকার।
২০১৪ সালের সেরা ছবি নির্বাচিত হয়েছে ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’। ‘মেঘমল্লার’-এর জন্য সেরা কাহিনিকার হয়েছেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, একই ছবির জন্য জাহিদুর রহিম অঞ্জন সেরা সংলাপ রচয়িতা ও সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেলেন। সেরা অভিনেতা ফেরদৌস ও অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন যৌথভাবে মৌসুমী ও বিদ্যা সিনহা মিম।
সেরা গায়কের পুরস্কার গ্রহণ হয়েছেন জেমস। যৌথভাবে সেরা গায়িকা নির্বাচিত হয়েছেন রুনা লায়লা ও মমতাজ। সেরা সঙ্গীত পরিচালক, গীতিকার ও সুরকার হয়েছেন যথাক্রমে সাইম রানা, মাসুদ পথিক ও বেলাল খান। সেরা চিত্রনাট্যকার সৈকত নাসির ও সেরা সম্পাদক হয়েছেন তৌহিদ হোসেন চৌধুরী।
সেরা খল চরিত্রের পুরস্কার পেয়েছেন তারিক আনাম খান। মিশা সওদাগর হয়েছেন সেরা কৌতুক অভিনয়শিল্পী। সেরা পার্শ্ব অভিনেতা এজাজুল ইসলাম ও পার্শ্ব অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন চিত্রলেখা গুহ। অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে রয়েছে শিশুশিল্পী, নৃত্য পরিচালক, শিল্প নির্দেশক, সম্পাদক, চিত্রগ্রাহক, শব্দগ্রাহক, সাজসজ্জা ও রুপসজ্জাকর।