Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

40খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০১৬: গৌরী ও খাদিজা দুজনই সমবয়সী। পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় একে অপরের কাছে আসা-যাওয়া দীর্ঘদিন ধরে। দুজনের মধ্যে বান্ধবী সম্পর্ক এমনটি ধারণা এলাকাবাসীর। কিন্তু বিষয়টি এখন ভিন্ন মনে হওয়ায় দুটি পরিবার দুশ্চিন্তায় পড়েছে।
গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে তারা। এক মুহূর্ত একজন আরেকজনকে ছেড়ে থাকতে রাজি নয়। শত চেষ্টায়ও কোনোভাবে আলাদা করা যাচ্ছে না তাদের। প্রয়োজনে একসঙ্গে মরবে আর বাঁচলে একসঙ্গে বাঁচবে এমনই ভাষ্য তাদের।
এ দুই কিশোরীর প্রেমের বিরল কাহিনী এলাকায় ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে। একটি মেয়ের প্রেমে আরেকটি মেয়ে হাবুডুবু খাচ্ছে। কি সম্পর্ক তাদের মধ্যে এমনই প্রশ্ন এখন সবার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। আর এই বিরল প্রেমের ঘটনা বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার কুড়ালতলা গ্রামে ঘটেছে।
এলাকাবাসী ও এ দুই কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার কুড়ালতলা গ্রামের বালক বাড়ৈর কন্যা গৌরী বাড়ৈর সঙ্গে প্রতিবেশী সালাউদ্দিনের কন্যা খাদিজা আক্তারের বান্ধবী সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন ধরে একে অপরের বাড়িতে আসা-যাওয়া করে তারা। বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে নেয় পরিবারের লোকজন। কিন্তু তাদের এ সম্পর্ক এক পর্যায় ভিন্ন রূপ নেয়।
গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে তারা। সুযোগ পেলেই দু’জনে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যায়। পরিবারের লোকজন শত চেষ্টায়ও কোনোভাবে ফেরাতে পারছে না তাদের। এ পরিস্থিতিতে মহাবিপাকে পড়েছে পরিবার দুটি। গৌরী ও খাদিজা সারা জীবন একসঙ্গে বসবাস করতে চায়- এমনটাই দাবি তাদের। দুজন দুজনকে ভালোবাসে বলে জানায় তারা। বাকি জীবনও একসঙ্গে কাটাতে চায় দুজনে। এমনকি স্বামীর সংসার করতেও রাজি নয় তারা। গৌরীর পিতা বালক বাড়ৈ ক্ষোভের সঙ্গে জানান, এমন মেয়ে যেন আর কারো না হয়। তার মেয়েকে ফেরানোর জন্য মাসখানেক আগে তাকে ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু সে স্বামীর ঘরে না গিয়ে খাদিজার কাছে ঢাকায় গিয়ে উঠেছে।
সেখান থেকে অনেক কৌশলে তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হলেও সে আর স্বামীর ঘরে যেতে চাইছে না। তাকে অনেক বুঝিয়েও খাদিজার কাছ থেকে ফেরানো যাচ্ছে না। মেয়েকে নিয়ে মহাদুশ্চিন্তায় আছেন। আবার সুযোগ পেলে সে পালিয়ে যাবে বলে সারাক্ষণ চোখে চোখে রাখতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে খাদিজার মা ফাতেমা বেগম জানান, তার মেয়েকে গৌরীর কাছ থেকে আলাদা করার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল কিন্তু ফোনে যোগাযোগ করে গৌরী সেখানে তার কাছে গিয়ে ওঠে। বিষয়টি নিয়ে তাদেরও ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে।
এছাড়া দুটি পরিবারের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মহিলা পরিষদের সভানেত্রী হেলানা পারভীন জানান, সাধারণত ছেলে-মেয়েদের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু এটা একটা ভিন্ন বিষয় বলে মনে হচ্ছে। গৌরী আর খাদিজার সম্পর্কটা আসলে কি আমরা এখনো বুঝতে পারছি না। তাদের পরিবারও বিষয়টি নিয়ে বিপাকে পড়েছে। খাদিজা জানায়, সে এখন গৌরীকে ছেড়ে থাকতে চেষ্টা করছে। কিন্তু গৌরী কোনো ভাবে তার পিছু ছাড়ছে না।