Fri. May 2nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

12k12kখোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৬ মে ২০১৬: বিদশের বিভিন্ন স্থানে ক্যাম্পগুলোর বাইরে থাকা বিহারিদের উচ্ছেদে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এতে বিহারিদের উচ্ছেদ না করে যে অবস্থায় আছে, সেভাবেই রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
আজ সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও মির্জা হোসেইন হায়দার।
এর আগে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বিহারি ক্যাম্পের পক্ষ থেকে আপিল দায়ের করা হয়।
আজ প্রাথমিক শুনানি শেষে এই স্থিতাবস্থা জারি করা হলো।
বিহারিদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট হাসান আরিফ ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে ক্যাম্পগুলোর বাইরে অবৈধভাবে বসবাসরত বিহারিদের উচ্ছেদে বাধা নেই। তবে ক্যাম্পের ভেতর জাতীয় পরিচয়পত্রধারী বিহারিদের পুনর্বাসন করতে হবে।
উচ্ছেদের বিষয়ে করা ১০টি রিট আবেদনের শুনানি শেষে গত ২৯ মার্চ বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই রায় দেন।
রিটকারীর পক্ষে ওই দিন শুনানি করেন অ্যাডভাকেট আবদুল বাসেত মজুমদার, ব্যারিস্টার সারা হোসেন ও অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান খান।
রিটকারীর আইনজীবী হাফিজুর রহমান খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, মিরপুরের পল্লবীর বিহারি ক্যাম্প, মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প, নীলফামারীর সৈয়দপুরের বিহারি ক্যাম্পের বাইরে সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে যাঁরা বাস করছেন, তাঁদের উচ্ছেদের রায় দেওয়া হয়েছে। আদালতের এ রায়ের ফলে অবৈধভাবে বসবাসরত বিহারিদের উচ্ছেদে বাধা নেই।
রিট আবেদন সূত্রে জানা যায়, মিরপুর পল্লবী থানার অন্তর্ভুক্ত ক্যাম্পের আশপাশের সরকারি জায়গাগুলো ১৯৯৫ সালে জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে প্লট হিসেবে বরাদ্দ দেয়। পরে প্লট পাওয়া ব্যক্তিদের পজিশন লেটার (জায়গার অবস্থানসংক্রান্ত চিঠি) বুঝিয়ে দেয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। এর অংশ হিসেবে ২০০২ সালের ৫ ফেব্র“য়ারি মিরপুরে অবস্থানরত বিহারিদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে ঢাকা সিটি করপোরেশন।
এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিহারি সংগঠন উর্দু স্পোকিং রিহ্যাবিলিটেশন মুভমেন্টের সভাপতি সাদাকাত খান ফাক্কু ও সেক্রেটারি শাহিদ আলী বাবলু হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। এরপর হাইকোর্ট পল্লবী থানার ক্যাম্পবাসীর অন্য জায়গায় পুনর্বাসন না করা এবং রিটের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
২০০৩ সালে গণপূর্ত মন্ত্রণালয় আবার বিহারিদের উচ্ছেদের চেষ্টা করলে একটি সম্পূরক আবেদন করেন রিটকারীরা। এরপর হাইকোর্ট রুল জারি করে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দেন।
দীর্ঘদিন শুনানির পর ২৯ মার্চ চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে সারা দেশে ক্যাম্পের বাইরে অবস্থানরত উর্দুভাষী বিহারিদের উচ্ছেদে বাধা নেই বলে জানান হাইকোর্ট। তবে জাতীয় পরিচয়পত্রধারী বিহারিদের পুনর্বাসনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তবে আজ হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এতে বিহারিদের উচ্ছেদ না করে যে অবস্থায় আছে, সেভাবেই রাখতে হবে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর মিরপুরের ৪০টি ক্যাম্পে ৭০ হাজার বিহারি আছে।