খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০১৬: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৩৫তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস আজ ১৭ মে।
১৯৮১ সালের এই দিনে দীর্ঘ নির্বাসন শেষে বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকার কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান। খবর বাসসের।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রবাসে থাকায় ঘাতকদের হাত থেকে রেহাই পান।
পরবর্তী সময়ে ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্র“য়ারিতে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়।
১৭ মে শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানানোর জন্য উপস্থিত হন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ। তাঁদের হৃদয়ছোঁয়া ভালোবাসার জবাবে তিনি বলেন, বাংলার মানুষের পাশে থেকে মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি দেশে এসেছেন।
‘আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসেবে, মেয়ে হিসেবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ সাত দিনের বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া দলটির সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগ পৃথকভাবে দিবসটি পালনে কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে এ দেশের গণতন্ত্র নস্যাৎ ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ ভূলুণ্ঠিত করা হয়। ১৯৮১ সালের ১৭ মে রাজনীতিবিদ হিসেবে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আবারও দেশে স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, পঁচাত্তর-পরবর্তী জিয়াউর রহমানের অপশাসনে দেশের মানুষের রুদ্ধশ্বাস অবস্থার সময়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দিবসটি তাই জাতির কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের পর যারা ছিল অবহেলিত ও নির্যাতিত, ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তনে ও তাঁর নেতৃত্বের পরশে তারা আবারও জেগে ওঠার সাহস ও প্রেরণা পেয়ে যায়। এ দিন শেখ হাসিনার নামে যথার্থই জেগে ওঠে বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আজ বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সস্মেলন কেন্দ্রে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। এতে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে সভায় দেশের বরেণ্য নাগরিক ও জাতীয় নেতারা উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করবে। শোভাযাত্রাটি শাহবাগ মোড় ঘুরে অপরাজেয় বাংলায় শেষ হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য আওয়ামী লীগ ও সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সর্বস্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক-শুভানুধ্যায়ী এবং দেশের সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।