খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৭ মে ২০১৬: বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন এক মাইলফলক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
আজ ১৭ মে, মঙ্গলবার শেখ হাসিনার ৩৫তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এ মন্তব্য করেন। খবর বাসসের।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধু-তনয়া ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়। এরই ধারাবাহিকতায় নব্বইয়ের গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয় হয়।
বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, তাঁর দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকন্যা তাঁর সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে দেশকে ধাপে ধাপে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনার চলার পথ মসৃণ ছিল না উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তাঁর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় প্রাণে বেঁচে যান। পরবর্তী সময়ে ছয় বছর লন্ডন ও দিল্লিতে তাঁদের চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়।
স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শেখ হাসিনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তাঁর নেতৃত্বে বিপুল ভোটে জয়লাভ ও সরকার গঠন করে। এ সময় পাহাড়ি-বাঙালি দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে পার্বত্য শান্তিচুক্তি এবং প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বে ১৪ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসে এবং জনকল্যাণে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এ সময় গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারীর ক্ষমতায়ন, বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, গ্রামীণ অবকাঠামো, বৈদেশিক কর্মসংস্থানসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর হয়।
রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোট সরকার আবার ক্ষমতায় এসে বর্তমানে সরকার পরিচালনা করছে। এতে জনগণের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নতি এবং নিজস্ব অর্থায়নে দেশের বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। সমুদ্রে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত স্থলসীমানা নির্ধারণ তথা ছিটমহল বিনিময় চুক্তিসহ গণমানুষের কল্যাণে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
দেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে শেখ হাসিনা ‘ভিশন ২০২১’ ও ‘ভিশন ২০৪১’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে তাঁর এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বাংলার ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করে রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের আগে ১৯৮১ সালের ১৪-১৬ ফেব্র“য়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করা ছিল আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতৃবৃন্দের এক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত।