খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২০ মে, ২০১৬: কুমিল্লার কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যার দুই মাস পূর্ণ হচ্ছে আজ শুক্রবার। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। উল্টো ডিএনএ প্রতিবেদন পাওয়া নিয়ে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে ফরেনসিক কমিটির রশি টানাটানি চলছে। দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেছে এই টানাপোড়েনে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ গতকাল বৃহস্পতিবার মুঠোফোনে বলেন, ‘তনু হত্যার সঙ্গে যাঁদের আমরা সাসপেক্ট (সন্দেহ) করছি, তাঁদের সবার ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে প্রাপ্ত প্রতিবেদনের সঙ্গে মেলানো হবে।’ তনুর মায়ের দাবি, সার্জেন্ট জাহিদ ও সিপাহি জাহিদ এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এঁদের ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাহার আকন্দ বলেন, ‘আমরা সাসপেক্ট সবাইকেই এর আওতায় আনব।’
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় তাঁর দপ্তরে বলেন, ডিএনএ প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলানো সময়ের ব্যাপার। এটা হুট করে করা সম্ভব নয়।
তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড সিআইডির কাছে চিঠি দিয়েও ডিএনএ প্রতিবেদন সংগ্রহ করতে পারেনি। গতকাল মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম আদালত থেকে ডিএনএ প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য মেডিকেল বোর্ডকে পরামর্শ দিয়ে চিঠি দেন।
মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, এ পরিস্থিতিতে বোর্ডের সদস্যরা বৈঠকে বসবেন। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে ডিএনএ প্রতিবেদন নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেবেন। কবে নাগাদ দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিএনএ প্রতিবেদন ছাড়া বোর্ড কিছুই করবে না।
তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন কেন সঠিক দেওয়া হলো না, তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। সিআইডির তদন্ত নিয়ে এখন পর্যন্ত আমি সন্তুষ্ট।’
কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ জোহরা আনিস বলেন, তনুর মা-বাবা এত বড় শোক বুকে চেপে বেঁচে আছেন। তাঁদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। অবিলম্বে সরকারকে দেশবাসীর চাওয়া পূরণ করতে হবে।
বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা কুমিল্লার সভাপতি আইনজীবী নাজমুল আলম চৌধুরী নোমান বলেন, তনু হত্যাকাণ্ডের বিচার না হলে সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না।