খোলা বাজার২৪, শনিবার, ২১ মে, ২০১৬: উপকূলীয় অঞ্চলে হালকা আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু। বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়ায় এখন পর্যন্ত আঘাতের তীব্রতা পরিলক্ষিত হয়নি। তবে এই আঘাতেও চট্টগ্রাম, ভোলা ও পটুয়াখালীতে ৫ জনের প্রাণহানি হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। এই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে আবহাওয়া বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ শক্তিশালী হয়ে বাংলাদেশে উপকূলের দিকে আরও এগিয়ে এসেছে। শনিবার দুপুরের মধ্যেই এটি বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও বরিশাল উপকূল অতিক্রম করবে।
এতে আরও বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু মূলত শুক্রবার মাঝরাতে উপকূলে আঘাত হানে। এর প্রভাবে তখন থেকে উপকূল অঞ্চলসহ সারা দেশে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আর এই বৃষ্টিই ঘূর্ণিঝড়ের শক্তিকে দুর্বল করে দিয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট ঝড়ে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলায় ঘরচাপায় নারীসহ দু’জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক লোকজন। এছাড়া ঝড়ে উপজেলার বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি ও দোকানপাট বিধ্বস্ত হয়েছে। নিহতরা হলেন- উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের শশিগঞ্জ গ্রামের নয়নে স্ত্রী রেখা বেগম (৩৫) ও একই এলাকার মো. মফিজের ছেলে আকরাম (১৪)। দু’জনের বাড়ি উপজেলার শশীগঞ্জ গ্রামে।
পটুয়াখালীর দশমিনায় ঘূর্ণিঝড়ে শনিবার সকালে নয়া বিবি (৫২) নামে এক গৃহবধূ ঘুমন্ত অবস্থায় ঘরচাপায় নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার উত্তর লক্ষ্মীপুর গ্রামের সুন্দর আলীর স্ত্রী। জেলার রাঙ্গাবালী ও গলাচিপা উপজেলায় বেশকিছু কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর ইউনিয়নের জঞ্জল সলিমপুরে গাছচাপায় শনিবার ভোররাতে মা কাজল বেগম (৫০) ও তার ছেলে মো. বাবু (১০) নিহত হয়েছেন। নিহতরা ওই এলাকার মো. রাফিকের স্ত্রী ও ছেলে।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া রাডার স্টেশনের কর্মকর্তা প্রকৌশলী প্রদীপ চক্রবর্তী জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ব্যাপ্তি ছিল দুটি বাংলাদেশের সমান আকৃতির। তিনি বলেন, সাগরের উপরি ও নিম্নভাগে অবস্থান নেয় রোয়ানু। অতি বৃষ্টিই বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে উপকূলকে রক্ষা করেছে। প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের সর্বত্র আঘাত অব্যাহত রেখেছে রোয়ানু। তবে তা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে আঘাত হানছে। শনিবার পায়রা সমুদ্র বন্দর এলাকা ত্যাগ করে রোয়ানুর গতিপথ মিয়ানমার ও ভারতের আসামের দিকে যাবে বলেও জানান তিনি।