খোলা বাজার২৪, সোমবার, ২৩ মে, ২০১৬: বাংলাদেশে সাম্প্রতিক হত্যার ‘চক্র’ ভাঙার আহ্বান জানিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে ইউরোপীয় মিশনগুলোর প্রধানরা বলেছেন, এই ধরনের হামলা চলতে থাকলে তা ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকা অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রোববার তাদের প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ ‘উদ্বেগের’ কথা তুলে ধরেন।
এতে বলা হয়, ইউরোপীয় কূটনীতিকরা সাম্প্রতিক সময়ে ব্লগার, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, মানবাধিকার কর্মী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা ও বিদেশিদের ওপর একের পর এক বর্বর হামলার বিষয়ে আলোকপাত করেন।
এসব হামলা মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা ও বিশ্বাসের প্রতি ‘নজিরবিহীন হুমকি’ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেন তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, “মুক্ত, সহনশীল এবং স্থিতিশীল ও সম্ভাবনাময় বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি বহিঃবিশ্বে রয়েছে এসব ঘটনায় তা ক্ষুণœ হতে পারে।”
গত বছর ফেব্র“য়ারিতে বইমেলা চলাকালে ঢাকায় মুক্তমনা লেখক অভিজিৎ রায় খুন হওয়ার পর ধারাবাহিক হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন আরও কয়েকজন ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। এর মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন প্রকাশক, খ্রিস্টান-বৌদ্ধ ধর্মগুরু, সমকামী অধিকারকর্মী, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও ভিন্ন মতের ইসলামী ভাবধারা অনুসারী।
এসব হামলার অনেকগুলোতে দায় স্বীকার করে আইএস ও আল-কায়েদার নামে বার্তা এলেও সরকার বলছে, অভ্যন্তরীণ জঙ্গিরাই এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।
এসব ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে এবং ‘ঝুঁকিতে’ থাকা সব নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করে ‘সহিংসতার এই চক্র’ ভাঙার আহ্বান জানান ইউরোপীয় দূতরা।
সহিংস চরমপন্থা দমনে বৃহত্তর কর্মসূচির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তারা।
জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় সমন্বিত পদক্ষেপের অংশ হিসেবে গণতান্ত্রিক জবাবদিহি, বাক স্বাধীনতা, শক্তিশালী গণমাধ্যম, সহনশীলতা বৃদ্ধি এবং সুশীল সমাজের ক্ষমতায়নের ওপর গুরুত্ব দেন ইউরোপীয় প্রতিনিধিরা।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা ও অংশীদারিত্ব বাড়ানোর প্রস্তাব দেন তারা।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূতরা অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থানের কথাও মন্ত্রীর সামনে পুনর্ব্যক্ত করেন বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।