খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা বৈধ বলে দেওয়া হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে।
আজ বুধবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রায় প্রকাশ করা হয়।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে বলা হয়েছে, রায় প্রকাশের দুই মাসের মধ্যে খালেদা জিয়াকে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আবেদন খারিজ করে দেন হাইকোর্ট।
এর ফলে এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম চলতে আইনি বাধা দূর হলো বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, বর্তমানে খালেদা জিয়ার মামলাটি নিম্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
খালেদা জিয়ার আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী ও ব্যারিস্টার আহসানুর রহমান। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান।
খালেদা জিয়ার প্যানেল আইনজীবী ব্যারিস্টার আহসানুর রহমান আজ বলেন, গত বছর ৩০ আগস্ট বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলার রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়। এর পর যেকোনো দিন রায় দেওয়া হবে জানিয়ে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন আদালত। পরে ১৭ সেপ্টেম্বর সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করা হয়। প্রায় নয় মাস পর পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি উত্তোলন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণে ঠিকাদার নিয়োগে অনিয়ম এবং রাষ্ট্রের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ক্ষতি ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্র“য়ারি শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। এ মামলায় একই বছরের ৫ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। পরে মামলাটি বাতিল চেয়ে একই বছর হাইকোর্টে আবেদন করেন খালেদা জিয়া। ওই আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে একই বছর ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন। একই সঙ্গে মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান ও বিচারপতি আবদুর রবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের দিন নির্ধারণ করেন।
ওই মামলায় খালেদা জিয়া ছাড়াও অন্য আসামিরা হলেন—সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান (প্রয়াত), আবদুল মান্নান ভূঁইয়া (প্রয়াত), জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামী (মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত), আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ (মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত), বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, এম কে আনোয়ার, এম শামসুল ইসলাম (প্রয়াত), আলতাফ হোসেন চৌধুরী (প্রয়াত), ব্যারিস্টার আমিনুল হক, এ কে এম মোশাররফ হোসেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এস আর ওসমানী, সাবেক পরিচালক মঈনুল আহসান, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম ও খনির কাজ পাওয়া কোম্পানির স্থানীয় এজেন্ট হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জাম হোসেন।