খোলা বাজার২৪, বুধবার, ২৫ মে, ২০১৬: স্বাস্থ্য সচেতনদের টেবিলে প্রতিদিন ব্রেড থাকে। দিল্লির সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের (সিএসই)-এর এক গবেষণায় বলা হয়েছে, খাবারের টেবিলে এই ব্রেডই সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর নয়। শুধু তাই নয়, এদের সম্পর্কে কিছু তথ্য রীতিমতো আতঙ্কজনক।
এমনকি নামকরা ব্র্যান্ডের বানানো বাদামী বা মাল্টিগ্রেইন ব্রেডও এ তালিকায় রয়েছে। এসব ব্রেডে রয়েছে উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম ব্রোমেট এবং আয়োডেট। এ দুটো রাসায়নিক পদার্থ ব্রেড বানানোর সময় ব্যবহার করা হয়।
১৯৯২ সালে ডাব্লিউএইচও এবং এফএও-এর যৌথ গবেষণায় বলা হয়, ব্রেড বানাতে পটাশিয়াম ব্রোমেটের ব্যবহার স্বাস্থ্যকর নয়। আরেক বিশেষজ্ঞ পদ্মা ভিজে জানান, এই রাসায়নিক পদার্থের বিকল্প হিসাবে অক্সিডাইজিং এজেন্টের ব্যবহার করা যেতে পারে। ইতিমধ্যে এ পথে এগিয়েছে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি অব ইন্ডিয়া। তারা এ উপাদানের ব্যবহার রোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পদ্মা বলেন, ব্রেড নির্মাতারা অক্সিডাইজিং এজেন্ট ব্যবহার করেন না। চীনে পটাশিয়াম ব্রোমেট ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কিছু ইউরোপিয়ান দেশেও এর ব্যবহার নিষেধ। তবে অদ্ভুত হলেও সত্য, আমেরিকায় এটি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া আছে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি বিকল্প হিসাবে কোনো অর্গানিক এজেন্ট খুঁজে বের করা হয়।
মার্কিন লেখক এবং খাদ্য বিশারদ তার ‘কুকড’ শো-এ দেখিয়েছেন, ময়দার তাল ব্যবহার করে বানানো ইয়েস্টের ব্যবহারে যে ব্রেড তৈরি হয় তাই সর্বাধিক স্বাস্থ্যকর।
আরেক বিশেষজ্ঞ সুজিত সুমিত্রানের মতেও ময়দার তালের ব্যবহারে তৈরি ইয়েস্টের ব্রেডই সর্বোত্তম। এই ব্রেড হাজার বছর আগেও বানানো হতো। একবার এই ব্রেড যারা খাবেন, তারা আর দুনিয়ার কোনো ব্রেডই মুখে তুলবেন না।
এখানে জেনে নিন বাজারে যেসব ব্রেড পাওয়া যায়া এদের সম্পর্কে কিছু ভয় ছড়ানো তথ্য।
১. বাণিজ্যিকভাবে উৎপন্ন ইয়েস্টের মাধ্যমে ব্রেড তৈরির সময় ৫ গুন কমিয়ে আনা হয়েছে। যখন এটি দেহে প্রবেশ করে, তখন তা ভাঙতে বহু সময়ের প্রয়োজন হয়। এর ময়দা সহজে হজম হতে চায় না এবং সেলিয়াক ডিজিজের ঝুঁকি বেড়েই চলে।
২. এসব ব্রেডের আরেকটি বৈশিষ্ট্যের জানান দিলেন শেফ পল কিনি। বললেন, বাজার থেকে কিনে আনা ভালোমানের ব্রেড বাড়িতে দুই দিন রেখে দিন। যদি ছত্রাক না পড়ে তবে বুঝে নিন, এতে প্রচুর পরিমাণে প্রিজারভেটিভ দেওয়া হয়েছে।
৩. অনেক ব্রেডে আবার ব্লিচিং এজেন্ট থাকে। এগুলো ক্যান্সার সৃষ্টির কারণ হতে পারে। বাজারে পাওয়া অধিকাংশ আটা-ময়দায় ব্লিচিং এজেন্ট থাকে।
৪. ব্রেড নিয়ে তার ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত কাটার পর চাপ পড়ে। এই চাপে ব্রেড নিচের দিকে নেমে যাবে। ভালো মানের ব্রেড স্প্রিংয়ের মতো আবারো আগের আকার ফিরে পায়।
৫. বাণিজ্যিক ব্রেডগুলোতে রাসায়নিক উপাদানের ককটেইল দেওয়া থাকে। ব্রেড স্ট্যাবিলাইজার বা ইম্প্রোভার ইত্যাদি কাজে এদের ব্যবহার ঘটে। এসব ব্রেড কখনোই স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো তো নয়ই, বরং অনেক ক্ষতিকর। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস