খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ২৬ মে, ২০১৬: নিশিশুদের ধর্ষণের শাস্তি কঠোর করেছে ইন্দোনেশিয়া। ধর্ষকদের নপুংশক বা পুরুষত্বহীন করে দেয়া রয়েছে এ শাস্তির অধীনে।
জাকার্তা পোস্টে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে আরও বলা হয়, ইন্দোনেশিয়ায় শিশু ধর্ষণ বেড়ে গেছে। এতে সমাজে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো আইনের পরিবর্তে একটি বিধি জারি করেছেন। তাতে শিশুদের ধর্ষণকারীদের পুরুষত্বহীন করে দেয়া সহ রয়েছে কঠোর সব শাস্তির ব্যবস্থা। এই বিধান জারির পর পরই তা কার্যকর হওয়ার কথা। এই বিধানটি শিশুর নিরাপত্তা বিষয়ক আইন নম্বর ২৩/২০০২কে আরও শক্তিশালী করবে।
অভিযুক্ত ধর্ষককে পুরুষত্বহীন করার ছাড়াও একজন বিচারক ধর্ষকের দেহে একটি ইলেকট্রনিক চিপ বসিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিতে পারবেন। ওই চিপ বসিয়ে দিলে একজন ধর্ষক যখন তার শাস্তির মেয়াদ ভোগ করবে তখন তার চলাফেরা মনিটরিং করতে পারবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো। এ ছাড়া শিশু ধর্ষকদের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদ- তো রয়েছেই। দীর্ঘদিন ধরে এ শাস্তির বিরোধিতা করে আসছে বিভিন্ন অধিকারকর্মী। নতুন বিধিতে স্বাক্ষর করে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেছেন, ব্যতিক্রমী অপরাধ মোকাবিলা করা হবে ব্যতিক্রমী উপায়ে। তিনি বলেন, শিশুর বিরুদ্ধে যৌন অপরাধকে তার সরকার ব্যতিক্রমী অপরাধ হিসেবে দেখছে। কারণ, এ অপরাধের কারণে শিশুর ব্যক্তিত্বে ও তার শৈশব জীবনের ওপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। উল্লেখ্য, গত মাসে ইন্দোনেশিয়ার বেঙ্গকুলুতে ১৪ বছর বয়সী একটি বালিকাকে ধর্ষণ করে পরে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া গরোনতলো, নর্থ সুলাওয়েসি ও তেঙ্গেরাংয়ে গণধর্ষণ হয়েছে। এসব ঘটনার পর ধর্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিতে দাবি জানায় দেশবাসী। তারই প্রেক্ষিতে সরকার এমন বিধি জারি করেছে। এতে শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধের অন্য শাস্তির মধ্যে যাবজ্জীবন কারাদ- তো আছেই। সর্বনিম্ন জেলের মেয়াদ করা হয়েছে ১০ বছর। আগে এটা ছিল তিন বছর।
দেশটির আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক মন্ত্রী ইয়াসোনা লাওলি বলেন, আগে যেসব ধর্ষকের বিরুদ্ধে লঘু শাস্তি দেয়া হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে নতুন এ বিধি কার্যকর হবে না। তবে ভবিষ্যতে এমনটা হবে না। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকেই নতুন এই বিধি কার্যকর হচ্ছে। সরকার এটিকে প্রতিনিধি পরিষদে পাঠাবে। সেখানে অনুমোদন হয়ে বিধিটি আইনে পরিণত হবে। তিনি আরও বলেন, ধর্ষক যদি অপ্রাপ্ত বয়স্ক হয় তাহলে তার ক্ষেত্রে নতুন এ বিধি কার্যকর হবে না। গণধর্ষণ, শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ক ও টার্গেট করে অপরাধ সংঘটনকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা হবে এই বিধি। এখন থেকে ধর্ষককে রাসায়নিক পদ্ধতিতে পুরুষত্বহীন করে দেয়া হতে পারে। আবার একই সঙ্গে তার দেহে ইলেকট্রনিক চিপ বসিয়ে দেয়া হতে পারে। একই সঙ্গে এ দুটি শাস্তি দেয়া হতে পারে ধর্ষককে। এ ছাড়া রয়েছে ৫০০ কোটি রুপিয়া জরিমানা।