Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

38খোলা বাজার২৪, শনিবার, ২৮ মে ২০১৬: স্পেনের রাজধানী থেকে দলে দলে সমর্থকরা ছুটছেন ইতালির মিলানে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে প্রতিপক্ষ আবারও মাদ্রিদের দুই ক্লাব। ২০১৪ সালের ফাইনালের পুনর্মঞ্চায়নের আগে আতলেতিকো মাদ্রিদের লক্ষ্য প্রথমবারের মতো ইউরোপ শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের। আর প্রতিযোগিতার সফলতম রিয়াল মাদ্রিদের সামনে আরও একবার মহাদেশ সেরার মুকুট পরার সুযোগ।
শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত পৌনে একটায় মিলানের সান সিরোয় শুরু হবে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি।
২০১৪ সালের মে মাসে লিসবনের ফাইনালে প্রথমার্ধে দিয়েগো গদিনের গোলে এগিয়ে যাওয়া আতলেতিকো ইতিহাস গড়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে সের্হিও রামোসের গোলে সমতায় ফেরে রিয়াল। পরে অতিরিক্ত সময়ে আরও তিনবার বল জালে জড়িয়ে ৪-১ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ের দলটি।
ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের সেরা প্রতিযোগিতায় এর আগে আরেকবার ফাইনালে উঠেছিল আতলেতিকো। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমের সেবারের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচেও প্রায় একইভাবে স্বপ্ন ভাঙে তাদের। বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে এগিয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে বসে স্পেনের দলটি। পরে রিপ্লে ম্যাচে ৪-০ গোলে জিতে যায় জার্মানির ক্লাবটি।
প্রথমবারের হতাশা চার দশকের বেশি আগের, স্বাভাবিকভাবেই তাই লিসবনের কষ্টটাই বেশি তাড়া করছে আতলেতিকোকে। তবে পুরনো কষ্ট ভুলে ইতিহাস গড়তে বদ্ধপরিকর দলটি। সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার গদিন যেমন ওই পরাজয় থেকেই প্রেরণা খুঁজে নিচ্ছেন।
“আমরা হেরেছিলাম, কিন্তু ওইরকম হার থেকে আপনাকে ইতিবাচক দিকগুলো নিতে হবে এবং শিখতে হবে কোথায় আপনার উন্নতি করতে হবে। এখন আমরা আরেকটা ফাইনাল খেলব এবং সেই অভিজ্ঞতা থেকে নিশ্চিত করতে হবে যেন ওরকম আর না ঘটে।”
ছন্দে থাকা স্ট্রাইকার ফের্নান্দো তরেস শৈশবের ক্লাবের হয়ে ইউরোপ সেরার ট্রফি জিততে মরিয়া। দুই বছর আগের ফাইনালে ছিলেন না তিনি। তবে তার স্বদেশি মিডফিল্ডার কোকেকে লিসবনের স্মৃতি ভুলতে চান।
“এটা নতুন, দারুণ, চমৎকার একটা সুযোগ। প্রতিশোধ আমাদের মনে নেই কারণ এই মুহূর্তে কেউই পিছনে ফিরে যেতে এবং আমাদের লিসবনের ফাইনালটা ফিরিয়ে দিতে পারবে না।”
“ক্লাবের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতে আমরা শুধু ইতিহাস গড়তে চাই।”
সাম্প্রতিক সময়ে মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যান থেকেও আত্ববিশ্বাসী হতে পারে আতলেতিকো; শেষ পাঁচবারের দেখায় রিয়ালের ১ জয়ের বিপরীতে দিয়েগো সিমেওনের দল জিতেছে ২টি, বাকি ২টি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
তবে রেকর্ড ১০ বারের চ্যাম্পিয়নরা ইউরোপ সেরার প্রতিযোগিতায় বরাবরই ফেভারিট। জিনেদিন জিদানের তারকাবহুল দলটি বর্তমানে আছেও দারুণ ছন্দে।
মৌসুমের শুরুটা বাজে করলেও লা লিগায় শেষ ১২ রাউন্ডের সব কটিতে জিতে শিরোপা লড়াই শেষ দিন পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিল রোনালদো-বেলরা। এই সময়ে তাদের হার মাত্র একটি, ভলফসবুর্গের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালের প্রথম লেগে। তবে ২-০ গোলের ওই হারের ধাক্কা কাটিয়ে ফিরতি পর্বে রোনালদোর দুর্দান্ত হ্যাটট্রিকে ৩-০ ব্যবধানে জেতে তারা।
মিলানে যুদ্ধে নামার আগে রিয়ালের বাড়তি অনুপ্রেরণা দলের সেরা তারকার দারুণ ফর্ম; লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মিলিয়ে এ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৫১টি গোল করেছেন রোনালদো। আর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তো বরাবরই সফল এই পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।
এরই মধ্যে এক আসরে গ্রুপ পর্বে সর্বোচ্চ গোলের (১১) রেকর্ড গড়েছেন তিনি। এখন পর্যন্ত ১৬ গোল করা রোনালদোর সামনে ফাইনালে থাকছে আরেক রেকর্ডের হাতছানি; দুটি গোল করলেই দুই বছর আগে নিজেরই গড়া এক আসরে সর্বোচ্চ গোলের (১৭) রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবেন তিনবারের বর্ষসেরা এই ফুটবলার।
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রেকর্ড ৯৩ গোলের মালিক রোনালদো বলেন, “আমরা লা লিগা ভালোভাবে শেষ করেছি এবং শনিবার একটি ভালো জয় চাই, যা রিয়াল মাদ্রিদের মৌসুমটাকে সফল করবে। এটা অর্জন করতে পারি বলে বিশ্বাস আছে আমাদের।”
রিয়ালের সম্ভাবনার পালে বাড়তি হাওয়া দিচ্ছে ‘বিবিসি’ নামে পরিচিত আক্রমণভাগের অন্য দুই তারকা গ্যারেথ বেল ও করিম বেনজেমার পারফরম্যান্সও। মৌসুমের অনেকটা সময় চোটে ভুগলেও লিগে ২৪ গোল করার পাশাপাশি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৪ গোল করেন বেনজেমা। একই কারণে সব ম্যাচ খেলতে পারেননি বেলও, তারপরেও লা লিগায় তার গোলসংখ্যা ১৯টি।
সব দিক বিবেচনা করে কোনো দলই নিজেদের ফেভারিট মানছে না। সান সিরোয় দুপক্ষই তাদের জয়ের সম্ভাবনা দেখছে ৫০-৫০। বিশ্বজোড়া ফুটবল রোমাঞ্চপিয়াসীরাও তাই উপভোগ্য এক ফাইনাল দেখার প্রত্যাশা করতে পারে।