Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

1kখোলা বাজার২৪, রোববার, ২৯ মে ২০১৬: বান্দরবানের আদিবাসী অধ্যুষিত থানচি উপজেলায় চলছে চরম খাদ্য সংকট। বনের আলু আর লতাপাতা খেয়ে বেঁচে আছে সেখানকার মানুষ। তাদের কথা, সরকার বা কোনো সংস্থা যদি দ্রুত খাদ্য সরবরাহ না করে তাহলে না খেয়ে মরে যাব।
রাজধানী ঢাকা থেকে প্রায় ৩৮০ কিলোমিটার দক্ষিণে থানচির অবস্থান। ওই জনপদের অধিবাসীরা পাহাড়ে জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল। খারাপ আবহাওয়া ও অতি বর্ষণের কারণে এবার জুমচাষীরা ঘরে ফসল ওঠাতে পারেননি। এছাড়া আগের বছরের জমানো খাবারও শেষ, আর এ কারণেই থানচির দুর্গম রেমাক্রি, তিন্দু, ছোট মোদক, বড় মোদক ও সাঙ্গু সংরক্ষিত বনাঞ্চলের আড়াই হাজার পরিবার এখন চরম খাদ্য সংকটে।
থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান কেওভাচিং মারমা জানান, এখানে দুর্ভিক্ষ চলছে সেটা বলতে চাই না তবে পরিস্থিতি সেদিকেই যাচ্ছে।
রম্নইমন ম্রো নামে একজন স্থানীয় অধিবাসী বলেন, আমরা খাবার না পেলে আর বাঁচতে পারব না। বনের আলু আর লতাপাতাও শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর এসব খেয়ে অনেকেই পেটের পীড়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দিনের পর দিন না খেতে পেয়ে অনেক নারী পুরুষ ও শিশু এখন কঙ্কালসার।
আদুউ ম্রো নামে আরেকজন জানান, প্রায় দুসপ্তাহ ধরে এই খাদ্য সংকট চলছে। আমরা বারবার আবেদন জানিয়েও কোনো ফল পাইনি। অনেক মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছে।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার কাজ শুরু করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগে ওইসব এলাকায় ১৬ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য পাঠানো হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার আরো ৩০ মেট্রিক টন খাদ্য পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে খাদ্য পৌঁছাতে সময় লাগছে।
থানচি উপজেলা চেয়ারম্যান কেওভাচিং মারমা বলেন, আমি আগে থেকেই প্রশাসনকে বিষয়টি জানিয়েছি। আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলেছি কিন্তু তা নেওয়া হয়নি। এখন কিছু ত্রাণের ব্যবস্থা হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। কারো ঘরেই খাবার নেই, বুনো লতাপাতা আর বুনো আলু খেয়ে অনেকে বেঁচে আছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান জানান, আগামী জুম ফসল ঘরে ওঠার আগ পর্যন্ত ৭-৮ মাস এই পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা দিতে হবে, কারণ, জুম ছাড়া তাদের খাবার সংগ্রহের আর কোনো উপায় নেই। তাই তাদের জন্য প্যাকেজের আওতায় সরকারের পক্ষ থেকে এই সময়ে নিয়মিত খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা করা জরুরি।
২০১৩ সালে বান্দরবানের থানচি, রুমা, রাঙামাটির সাজেক, বিলাইছড়ি, জুরাছড়ি উপজেলায় একই কারণে খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছিল। তখন মে থেকে অক্টোবর, এই ছয় মাসের জন্য সাড়ে ছয় হাজার পরিবারকে একটি প্যাকেজের আওতায় খাদ্য সাহায্য দেওয়া হয়।
এদিকে বান্দরবানের থানছি উপজেলার জন্য ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে শনিবার একশ টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব ত্রাণের চাল জরুরি ভিত্তিতে দুর্গত এলাকাগুলোতে পৌঁছাতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হবে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।