খোলা বাজার২৪, রোববার, ২৯ মে ২০১৬: বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির পেছনে উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং-উনের হাত থাকতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (এফবি আই) আগের কিছু তদন্ত সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে এমনটি মনে করছেন দেশটির সাইবার বিশেষজ্ঞরা।
স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাজ্যের পত্রিকা ‘মিরর’-এর অনলাইনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, জাপানের প্রযুক্তি ও মিডিয়া খাতের বহুজাতিক কোম্পানি সনির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সনি পিকচার এন্টারটেইনমেন্টে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা হামলা চালিয়েছিল বলে এফবি আই মনে করে।
মার্কিন এই গোয়েন্দা সংস্থার ভাষ্য, হ্যাকিংয়ের নতুন রহস্যের পেছনে ওই হ্যাকারদের যোগসূত্র থাকতে পারে। হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির পেছনে কিম জং-উনের হাত থাকতে পারে।
মার্কিন প্রযুক্তি খাতের প্রতিষ্ঠান সিমানটেকের সাইবার বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, রিজার্ভ চুরির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য জানতে যে ধরনের ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস ব্যবহার করা হয়েছে, তা এর আগে দুবার ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমবার ব্যবহার করা হয়েছে ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে সনি পিকচার এন্টারটেইনমেন্টে সাইবার হামলার সময়। এর পেছনে উত্তর কোরিয়া ছিল বলে মনে করা হয়। দি ইন্টারভিউ নামের চলচ্চিত্রের কারণেই ওই হামলা চালানো হয়। এর আগে ২০১৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার কয়েকটি মিডিয়া কোম্পানিতে ওই হ্যাকাররা সাইবার হামলা চালায় বলে দাবি করেছেন সিমানকেটের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এসব সাইবার হামলায় ব্যাকডোর.কন্টোপি নামের এক ধরনের ভাইরাস ব্যবহার করা হয়েছে।
সিমানটেক সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা এক ব্লগ পোস্টে এসব হামলার বিষয়ে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের দাবি, ‘এর আগে লাজারাস নামে একটি হ্যাকার দল হামলার সময় ব্যাকডোর.কন্টোপি ব্যবহার করে। লাজারাস ২০০৯ সালের দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চপর্যায়ের বিভিন্ন হামলা চালিয়েছিল। উচ্চমাত্রায় ধ্বংসাত্মক ট্রজান ভাইরাস নিয়ে ওই হ্যাকার দল কাজ করে। এটি সনি পিকচারে হামলার সময় ব্যবহার করা হয় বলে এফবি আই জানতে পারে। এ হামলার জন্য উত্তর কোরিয়ার সরকার দায়ী বলে মনে করে সংস্থাটি।’
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিমানটেকের সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ এরিক চিয়েন বলেন, ‘যদি আপনি মনে করেন যে ওই সব হামলার পেছনে উত্তর কোরিয়া রয়েছে, তাহলে ব্যাংকের হামলার পেছনেও কাজ করেছে উত্তর কোরিয়া।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, এখন পর্যন্ত ফিলিপাইনের প্রশাসন ঘটনার কাছাকাছি পৌঁছাতে পারেনি। আর এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোথাও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তদন্তকারী দল এক ধরনের রহস্যের মধ্যে থেকে গেছে।
গত ৫ ফেব্র“য়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের আট কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার যায় শ্রীলঙ্কায়। আর বাকি অংশ যায় ফিলিপাইনে। এসব অর্থের সিংহভাগই ফেরত পাওয়া যায়নি।