Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

15খোলা বাজার২৪, বৃহস্পতিবার, ০২ জুন২০১৬: ভবিষ্যতের সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে পরিকল্পনায় রেখে আসন্ন অর্থবছরে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা ব্যয়ের ফর্দ জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
প্রস্তাবিত বাজেটের এই ব্যয় বিদায়ী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে সাড়ে ১৫ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের চেয়ে ২৯ শতাংশ বেশি।
বৃহস্পতিবার বিকালে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী মুহিত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের এ মেয়াদের তৃতীয় এই বাজেট উপস্থাপনা শুরু হয় দেশের অর্থনীতিতে গত সাত বছরের সাফল্যের একটি মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে।
এবার মূল বাজেটের যে আকার মুহিত ধরেছেন, তা বাংলাদেশের মোট জিডিপির (১৯ লাখ ৬১ হাজার ১৭ কোটি টাকা) ১৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
অর্থাৎ, টাকার অংকে বাজেটের আকার বাড়লেও জিডিপির অনুপাতে গতবারের প্রায় সমান তালেই অগ্রসর হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। গতবছর প্রস্তাবিত বাজেট ছিল জিডিপিরি ১৭ দশমিক ২ শতাংশ।
প্রায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার এই বাজেটের মধ্যে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ২৭ কোটি টাকা; যার এক লাখ ১০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা যাবে সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি)।
আর অনুন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৫ হাজার ৭৪৪ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ৩২ শতাংশ বেশি।
এই অনুন্নয়ন ব্যয়ের বড় একটি অংশ যাবে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা এবং পেনশনে। এর সঙ্গে বিদেশি ঋণের পুঞ্জীভূত সুদ মেটানোর দায়ও রয়েছে।
টানা আটবার এবং ব্যাক্তিগত ১০টি বাজেট দেয়া মুহিত বিশাল এই ব্যয়ের ৭১ শতাংশের বেশি অর্থ রাজস্ব খাত থেকে আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করেছেন।
বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪২ হাজার ৭৫২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ২ লাখ ৩ হাজার ১৫২ কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন মুহিত।
এবারের বাজেটে সবচেয়ে বেশি কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে, ৭২ হাজার ৭৬৪ কোটি টাকা। এই অংক বিদায়ী অর্থবছরের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে মূল বাজেটে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ৬৪ হাজার ২৬২ কোটি টাকা। লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫৩ হাজার ৯১৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
আয়কর ও মুনাফার উপর কর থেকে ৭১ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়ার আশা করা হয়েছে এবারের বাজেটে। বিদায়ী বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ৬৪ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা।
এছাড়া নতুন বাজেটে আমদানি শুল্ক থেকে ২২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা, সম্পূরক শুল্ক থেকে ৩০ হাজার ৭৫ টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৪৪ কোটি টাকা, আবগারি শুল্ক থেকে ৪ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর ও শুল্ক থেকে ১ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের মূল বাজেটে মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭৬ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা। আদায় সন্তোষজনক না হওয়ায় তা সংশোধন করে ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
২০১৫-১৬ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ২ লাখ ৯৫ হাজার ১০০ কোটি টাকা। সংশোধন করে তা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকায় নামানো হয়।
অর্থমন্ত্রী সংসদের সামনে যে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেছেন, তাতে আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে ৯৭ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা।
অবশ্য ঘাটতির এই পরিমাণও মোট জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যেই থাকছে, যা অর্থনীতির বিবেচনায় সহনীয় বলে ধরা হয়।