খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ০৩ জুন ২০১৬ : সদ্য ঘোষিত ২০১৬-১৭ অর্বছরের বাজেট প্রস্তাবনা দেশের মানুষের হাসি কেড়ে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন এফবিসিসিআই সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। বাজেট ঘোষণার পর ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি নেই বলেও জানান তিনি।
শুক্রবার দুপুরে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ‘এবারের বাজেটের আকার অনেক বড় হয়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা। এ কারণে ব্যবসায়ীসহ সকলের করভার বাড়বে। কারণ বিশাল এ রাজস্ব বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সকল অর্থ আমাদেরকেই দিতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারকে মনে রাখতে হবে এ দেশ, দেশে উন্নয়ন ও ব্যবসা সব কিছুই আমাদের। তাই দেশের উন্নয়নে ব্যবসায়ীরা ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে চায়। তবে তা যৌক্তিক হতে হবে। বিশাল অংকের করভার চাপানো হলে ব্যবসীয়রা বাঁচবে না। আর ব্যবসায়ী না বাঁচলে দেশ ও দেশের মানুষ বাঁচবে না।’
আবদুল মাতলুব বলেন, ‘বাজেটে ব্যবসায়ীরা সুনির্দিষ্ট করে ৭টি প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বাজেট প্রস্তাবনায় তার একটিও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশন থেকে নানা অভিযোগ আসছে। তাদের কোনো প্রস্তাবনা মানা হয়নি। বরং করভার বাড়ানো হয়েছে। এ বাজেট পাশ হলে দেশের ব্যবসায়ীরা বাঁচবে না।’
সম্পূর্ণ বাজেট বিশ্লেষণ করে ৮/৯ জুন পূর্নাঙ্গ প্রতিক্রিয়া জানানো হবে বলে জানান তিনি।
এফবিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেটের অনেক বিষয় নিয়ে ব্যবসায়ীদের আপত্তি রয়েছে। বিশেষ করে প্যাকেজ ভ্যাট যে হারে বাড়ানো হয়েছে তা অস্বাভাবিক। এটা কোনোভাবেই মানা হবে না।’
তিনি আরো বলেন, ‘পোশাক শিল্পের উৎসে করহার কমানোর দাবি করেছিল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু উল্টো পোশাক শিল্পের উৎসে করহার বাড়িয়ে ১ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এটা অযৌক্তিক। এ কারণে দেশের রফতানি আয় হুমকির মুখে পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘একই সঙ্গে সরকার দেশকে যে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার যে ঘোষণা দিয়েছে তা বাস্তবায়ন হবে না। কারণ দেশকে উন্নত করতে হলে শিল্পের বিনিয়োগ ও কর্সংস্থান করতে হবে। পোশাক শিল্পের উৎসে কর বাড়ানো হলে বিনিয়োগ ও কর্সংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে না।’
এ সময় মাতলুব ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা ৪ মাস ধরে এনবি আরের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু আমাদের আলোচনার কোনো প্রভাব বাজেটে নেই। শুধু শোনার জন্য হলে আলোচনার কোনো দরকার নেই। শুধু শুধু আমাদের সময় নষ্ট করে লাভ কি? এ সময়টা আমাদের ব্যবসায় দিলে আরো ভালো হতো।’
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সিকিউরিটি সার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বলেন, ‘বাজেটে আমাদের উপর ভ্যাট ও করহার বাড়ানো হয়েছে। এটা প্রত্যাহার না হলে আমরা ২ লাখ কর্ দিয়ে আন্দোলনে নামবো। একই সঙ্গে দেশের সকল ক্ষেত্র থেকে সিকিউরিটি কর্মীদের প্রত্যাহার করে নিব।’
এছাড়া বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে বিশেষ করে ই-কমার্স, গোল্ড ও বেকারির পণ্যে অযৌক্তিক হারে কর ও ভ্যাট বসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। এ ভ্যাট, ট্যাক্স প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।