খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ০৩ জুন ২০১৬ : প্রস্তাবিত বাজেট তৈরি পোশাক শিল্প প্রসারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম।
বাজেট-পরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় মাহবুবুল আলম বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্পোরেট করহার ৩৫% থেকে কমিয়ে ২০% করা হয়েছে। ফলে এই শিল্প আরো সমৃদ্ধ হবে। সিটি করপোরেশনের বাইরে রিয়েল এস্টেট খাতে উৎসে কর কমানোর ফলে এসব জায়গায় এ খাতের বিকাশ হবে এবং মহানগরগুলোর ওপর চাপ কমবে। এসএমই খাতে টার্নওভার ৩৬ লাখ টাকা করায় এ খাতে সম্প্রসারণ ঘটাবে। পণ্য বা সেবার মূল্য নির্ধারণে অনুমোদন গ্রহণের ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা, করদাতা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত রেয়াত ভ্যাট কর্তন বা সমন্বয়ের সময় করদাতাকে শুনানির সুযোগ দেওয়া ইতিবাচক।
পাটজাত পণ্যের ক্ষেত্রে যোগানদার সেবা, রাবারের উৎপাদন পর্যায়, অ্যাম্বুলেন্স পরিবহন সেবা, হুইট ক্রাস, ডায়িং প্রিন্টিং সেবা খাতকে ভ্যাট অব্যাহতি দেওয়া এবং পামওয়েল ও সয়াবিনের ব্যবসায়ী পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি অব্যাহত রাখা প্রশংসাযোগ্য।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, যানজট নিরসনে চট্টগ্রাম সিটিতে আউটার রিং রোড, ইউলুপ ও ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৬.৫ কিমি. এলিভেটেট এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। আমরা এই ঘোষণাকে স্বাগত জানাই এবং বাস্তবায়ন চাই। তিনি বলেন, করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এটা ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা উচিত। যেকোনো কোম্পানি বা ৫০ লাখ টাকার অধিক গ্রস প্রাপ্তি আছে এমন প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম করহার ০.৩% থেকে বৃদ্ধি করে ০.৬% করা হয়েছে এবং সারচার্জের ক্ষেত্রে ১৫ কোটি টাকার অধিক কিন্তু ২০ কোটি টাকার কম হলে ২৫% এবং ২০ কোটি টাকার অধিক হলে ৩০% করহার নির্ধারণ করা হয়েছে, যা অত্যধিক। এ হারগুলো পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
চট্টগ্রাম চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আরামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ জামাল আহাম্মেদ বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলেন, নির্মাণ শিল্প খাতে অনেক উপকরণের শুল্ক হ্রাস করে ১৫% নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে, যা এই শিল্পে অচলাবস্থা দূর করে গতি আনবে। বস্ত্র খাতে স্ট্রিপিং কেমিক্যালের শুল্ক ২৫% থেকে হ্রাস করে ১৫% এবং কিছু কাঁচামালের শুল্ক ১০% থেকে ৫% নির্ধারণ করায় এই খাতের সম্প্রসারণে তা সহায়ক হবে। সিকেডি মোটরসাইকেলে সম্পূরক শুল্ক ৪৫% থেকে কমিয়ে ২০% এবং হাইব্রিড গাড়ি ও হিউম্যান হলারের ক্ষেত্রে রেয়াতি সুবিধা প্রদান পরিবহন খাতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে বলে মনে করেন সৈয়দ জামাল আহামেদ।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) চট্টগ্রাম চ্যাপ্টারের সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব বলেছেন, এই বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়ের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। প্রস্তাবিত প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকার বিশাল বাজেটের বাস্তবায়নের দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ খলিলুর রহমান বলেন, বিশ্ব মন্দা ও সামগ্রিক পরিস্থিতিতেও দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬০৫ কোটি টাকার সাহসী বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি উল্লেখ করেন, রাজস্ব ঘাটতি ৯২,৩৩৭ কোটি টাকা, আরো কমানো গেলে ভালো হতো। প্রস্তাবিত বাজেটে জিডিপি ৭.২ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা গেলে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতি আরো গতিশীল হবে। বাজেট প্রস্তাবনায় সরকারি কর্মকর্তাদের আয়করসহ নতুন করদাতা সৃষ্টির প্রয়াস অবশ্যই প্রশংসনীয়। তা না হলে বর্তমান কর প্রদানকারীর ওপরই চাপ অব্যাহত থাকবে। বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সুষ্ঠু শিল্পায়নের স্বার্থে এলএনজি আমদানিসহ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতকে অগ্রাধিকার দেওয়াকে আমরা সমর্থন করি। ব্যক্তিগত করদাতাদের করমুক্ত আয় সীমা ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বর্ধিত করে ৩ লাখ টাকায় উন্নীত করা হলে ভালো হতো।