Mon. Jul 21st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খোলা বাজার২৪, সোমবার, ০৬ জুন ২০১৬ : রংপুরের পীরগাছায় আপন দুলাভাই কর্তৃক শ্যালক হত্যা মামলাকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য নাটকীয়ভাবে আপন শ্বাশুড়ী কর্তৃক এবার নিহত ছেলের স্ত্রী, ভাতিজা সহ ৭জনের নামে আদালতে মামলা দায়ের করার চমকপ্রদ খবর পাওয়া গেছে।
জানা যায়, উপজেলার কান্দি ইউনিয়নের মনিরাম গ্রামে গত ২৬ মে গভীর রাতে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয়েছে মৃত নজরুল ইসলাম মাস্টারের একমাত্র ছেলে রাসেল (৩০)। এ ঘটনায় পরের দিন নিহত রাসেলের স্ত্রী শিল্পী বেগম রাসেলের আপন ভগ্নিপতি স্কুল শিক্ষক ও সাংবাদিক মকবুল হোসেনকে প্রধান আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করলে থানা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটককৃত মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওবায়দুল ওই মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করলে বিজ্ঞ আদালত ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে আসামী মকবুল রিমান্ডে পীরগাছা থানা হাজতে তদন্তকারী কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদে রয়েছেন। এদিকে এ হত্যাকান্ডকে ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য নাটকীয়ভাবে নিহত রাসেলের মা রহিমা বেওয়া বাদী হয়ে রংপুরের আদালতে ছেলের স্ত্রী শিল্পী বেগম ও আপন ভাতিজা সহ ৭জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। এ ঘটনায় মনিরামপুর গ্রামে গত রবিবার সরেজমিনে তদন্তে গেলে নিহত রাসেলের স্ত্রী, আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী জানায় বিগত ২০ বছর পূর্বে পার্শ্ববর্তী পাঠকশিকড় গ্রামের স্কুলশিক্ষক মকবুল হোসেন এর সাথে রাসেলের বড় বোন রুনা লায়লার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে মকবুল হোসেন শ্বশুরালয়ে ঘরজামাতা হিসেবে বসবাস করে আসছিলো। বসবাসকালীন সাংসারিক ও ছোটখাট তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি ও মনোমালিন্য হতো। ইতোপূর্বে পারিবারিক ঘটনার জের ধরে মকবুল হোসেন একাধিকবার তাকে বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিল। ফলে, ২০১২ সালে ভগ্নিপতি মকবুলের নামে পীরগাছা থানায় একটি সাধারণ ডাইরী করেন। যার ডাইরী নম্বর-৫৫২, তারিখ-১৩/০৫/২০১২। এছাড়াও ঘটনার দিন দুপুর বেলা বাড়ির গাছের আমপাড়াকে কেন্দ্র করে ভগ্নিপতি ও শ্যালকের মধ্যে ঝগড়া ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই বলেন, ভগ্নিপতি মকবুল হোসেন, মা রহিমা বেওয়া, বোন রুনা লায়লা রাসেলকে হত্যা না করা পর্যন্ত পানিও স্পর্শ করবে না বলে প্রত্যক্ষদর্র্শীদের সামনে প্রতিজ্ঞা করেন। এছাড়াও ঘটনার দিন রাতে ভগ্নিপতি মকবুল হোসেন এর বাড়িতে ৭/৮জন অচেনা লোক ঘোরাফেরা করেন ও রাতের বেলা মকবুলের ঘরে খাওয়া-দাওয়া সারেন। ঘটনার দিন ভোর বেলা রাসেল হত্যার খবর প্রতিবেশিদের মুখে শুনে ঘটনাস্থলে না গিয়ে মকবুল হোসেন তার মামা শ্বশুরের বাড়িতে গিয়ে খবর দেন এবং ‘মামা শ্বশুর ঘটনা প্রত্যক্ষ করার জন্য মকবুল সহ বাড়ি থেকে বের হয়ে ঘটনাস্থলে যাবার সময় পিছন থেকে শিমুলতলী বাজারে মকবুল হোসেন আত্মগোপন করেন বলে তার মামা শ্বশুর জানান। এছাড়াও এ হত্যাকান্ডের মূল ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহের অপচেষ্টায় জেলখানায় আটককৃত মকবুলের সাথে মোবাইল ফোনে ও সাক্ষাতে পরামর্শক্রমে ঘটনার ৭দিন অতিবাহিত হওয়ার পর একই হত্যাকান্ডের ঘটনায় রাসেলের মা রহিমা বেওয়া বাদী হয়ে নিহত রাসেলের স্ত্রী শিল্পী বেগম ও আপন ভাতিজা সহ ৭জনকে আসামী করে আদালতে অপর একটি হত্যাকান্ডের মামলা দায়ের করেন। এলাকাবাসী এটিকে একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও দুঃখজনক এবং প্রকৃত হত্যার ঘটনাকে আড়াল করতে এ মামলাটি দায়ের করেছেন বলে দাবী করেন। উপস্থিত এলাকাবাসী ও রাসেলের স্ত্রীসহ আত্মীয়স্বজনরা মামলাটিকে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রত্যাহার করে প্রকৃত শিল্পী বেগমের দায়ের করা পীরগাছা থানায় হত্যা মামলাটি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে গ্রেফতারকৃত মকবুল হোসেনসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে বিচারের কাঠগড়ায় দার করানোর আহবান জানান। এছাড়াও স্কুল শিক্ষক ও সাংবাদিক মকবুল হোসেনের নামে বিগত দিনে আরোও ২টি মামলা আছে ।