খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০১৬: রাজধানী ঢাকার মৌচাক মার্কেটের সকল দোকনপাট বন্ধের হাইকোর্টের নির্দেশ স্থগিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আগামী ছয় সপ্তাহ মার্কেট খোলা রাখা যাবে বলে আদালত বলেছেন।
মঙ্গলবার চেম্বার বিচারপতি মির্জা হোসেন হায়দার এ নির্দেশ দেন।
এর আগে গতকাল সোমবার হাইকোর্ট ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় রাজধানী ঢাকার মৌচাক মার্কেটের সকল দোকনপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। বুয়েটের প্রতিবেদনের আলোকে সংস্কার করা বা বিল্ডিং কোড অনুসারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সক্ষমতা সনদ না পাওয়া পর্যন্ত এসব দোকানপাট বন্ধ রাখতে বলা হয়।
সোমবার এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ওই আদেশ দেন। আদালত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব এবং রাজউক কর্তৃপক্ষকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলেন। এর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার আপিল করে মৌচাক মার্কেট কর্তৃপক্ষ। পরে আপিল বিভাগ মার্কেট খোলা রাখার এ নির্দেশ দেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৭ মে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) মৌচাক মার্কেটের ভবন মালিককে চিঠি দেন। চিঠিতে বলা হয়, ইমারতটি বহু পুরাতন ও বহুল ব্যবহৃত। প্রত্যহ হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। বর্তমানে ইমারতটি জীর্ণ ও দৃশ্যত ঝুকিপূর্ণ প্রতীয়মান হওয়ায় বুয়েট পুরকৌশল বিভাগ কর্তৃক পরীক্ষা-নীরিক্ষা পূর্বক কাঠামোগত উপযুক্ততার সনদ গ্রহণ করে চাওয়া তথ্যদি এই দপ্তরে (রাজউক) দাখিল করার জন্য অনুরোধ করা হলো। সেই সঙ্গে ভবনটির কাঠামোগত উপযুক্ততা নিশ্চিত হয়ে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হলো।
এর ধারাবাহিকতায় বুয়েটের দেওয়া সুপারিশ রাজউকে জমা পড়ে। এর প্রেক্ষিতে রাজউক গত ২ মে ভবন মালিককে আরেকটি চিঠি দেন।
২ মে দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, বুয়েট প্রণীত কাঠামোগত মূল্যায়ন প্রতিবেদনের পরামর্শ ও কর্তৃপক্ষের ওই নির্দেশনা স্বত্বেও কাঠামোগত ঝুঁকি হ্রাসে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে দায়িত্বহীনভাবে মার্কেট ব্যবহার অব্যাহত রেখেছেন, যা জীবন ও সম্পদের জন্য ঝুকিপূর্ণ এবং ইমারত নির্মাণ আইন-১৯৫২ এর সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। এ অবস্থায় মার্কেটটির ব্যবহার বন্ধ করে বুয়েট প্রণীত নকশা মোতাবেক বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে কাজ অবিলম্বে শুরু করার জন্য পুনরায় নির্দেশ দেওয়া হলো। কাঠামোগত ঝুকিপূর্ণ ভবনটি ব্যবহারের দরুণ যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে একমাত্র আপনিই (মালিক) এবং আপনার ব্যবস্থাপনা দায়ী থাকবে এবং ইমারত নির্মাণ আইন, ১৯৫২ অনুযায়ী যথাযথ আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এটি চূড়ান্ত নোটিশ বলে গণ্য হবে।
এই নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জেড কে লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভবন মালিক আশরাফ কামাল পাশা গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে রিট আবেদনটি করেন। রিটের ওপর রোববার ও সোমবার শুনানি নিয়ে আদালত রুলসহ ওই আদেশ দেন।