Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

47খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৭ জুন ২০১৬: প্রচণ্ড গরমে এ বছরের রোজায় বাংলাদেশিদের প্রায় ১৬ ঘণ্টা রোজা রাখতে হবে। গরমে দীর্ঘতম এই রোজায় আমাদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা ও জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই সুস্থভাবে রোজা রাখতে কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।
প্রচণ্ড গরমে রোজাদারদের শারীরিক যেসব পরিবর্তন হতে পারে :
১. আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৬.৫-৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদি পরিবেশের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়, তবে শরীরের পিএইচ (ঢ়ঐ )-এর পরিবর্তন ঘটে। এতে সব স্বাভাবিক বিপাক ক্রিয়া ও বায়োকেমিক্যাল কার্যক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
২. অতিরিক্ত গরমে শরীর থেকে দরকারি পানি ও ইলেকট্রলাইট (লবণ ও মিনারেল) বের হয়ে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, চোখে ঝাপসা দেখা, কর্মক্ষেত্রে মনোযোগ নষ্ট হওয়া ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। এমনকি সচেতন না হলে মৃত্যুঝুঁকিও হতে পারে।
৩. প্রচণ্ড গরমে দীর্ঘ সময় রোজা রাখলে পানিশূন্যতা, বুক জ্বালা/ এসিডিটিসহ নানা সমস্যা হতে পারে।
৪. গরমে ইফতার ও সেহরির খাবারে ব্যাকটেরিয়াসহ নানা জীবাণু জন্মাতে পারে। এতে খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়ে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন।
৫. দীর্ঘ সময় রোজাতে শরীরে জমানো গ্লাইকোজেন শক্তির উৎস আট ঘণ্টা পর শেষ হয়ে চর্বি থেকে শক্তি আসতে গিয়ে বিভিন্ন মেটাবলিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গরমে আরামদায়ক রোজার জন্য করণীয়
১. ইফতার ও সেহরিতে বেশি করে তরল খাবার খেতে হবে। পাশাপাশি শরীরে বেশি পানি ধরে রাখে এমন খাবার, যেমন—লেবু, কমলা, শসা, তরমুজ ও ডাবের পানি খেতে হবে।
২. ইফতার ও সেহরির মাঝখানে প্রচুর পানি ও পানিজাতীয় খাবার খেতে হবে। সেহরিতে কমপক্ষে এক লিটার পানি পান করতে হবে। এই পানি শারীর থেকে ক্ষতিকর উপাদান দূর করে ক্ষুধার চাহিদা কিছুটা কমাবে।
৩. চর্বিজাতীয় খাবার সেহরিতে বাদ দিতে হবে। কারণ, চর্বিজাতীয় খাবার শরীরে বেশি গরম তৈরি করে। এতে শরীর থেকে পানি বের হয়ে গিয়ে পানিশূন্যতা তৈরি হয়।
৪. সেহরিতে বেশি করে আমিষ/ প্রোটিন খাবার খেলে শরীর থেকে পানি কম বের হবে। এতে ক্ষুধা কম লাগবে এবং শক্তি থাকবে অনেকক্ষণ।
৫. চা ও কফি খাওয়া যাবে না। কারণ, এগুলোর মূত্রবর্ধক উপাদান প্রস্রাব বেশি তৈরি করে পানিশূন্যতা ঘটায়।
৬. শুকনো ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে যেতে হবে। কারণ, এগুলো তাড়াতাড়ি শক্তি দিলেও শরীরকে পানিশূন্য করে, ক্লান্ত অনুভূতি তৈরি করতে পারে।
৭. কোনো সেহরি বাদ দেওয়া যাবে না। শেষ মুহূর্তে সেহরি খেতে হবে, যাতে সারা দিন শরীরে শক্তি থাকে।
৮. গরমে আরামের জন্য রোজাদারকে সুতির সাদা বা হালকা রঙের কাপড় পরতে হবে। এতে শরীর ঠান্ডা থাকবে।
৯. রোজাদাররা দরকার ছাড়া বাইরে না বেরোলেই ভালো। বাইরে বের হলে প্রয়োজনে ছাতা ব্যবহার করবেন।
১০. বেশি পরিশ্রমের কাজ একসঙ্গে না করে প্রতিদিনের কাজগুলো অল্প বিরতি দিয়ে করলে ক্লান্তি ভাব কম লাগবে।
১১. খাদ্যের বিষক্রিয়া থেকে বাঁচার জন্য, অতিরিক্ত গরমে বাসায় বানানো গরম গরম সেহরি ও ইফতার খেতে হবে।