খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ১১ জুন ২০১৬: কুমিল্লার কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামীকাল রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীমের কাছে ওই প্রতিবেদন পৌঁছানো হবে।
তনুর লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহা বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তবে প্রতিবেদনে তনুর মৃত্যুর কারণ কী, ধর্ষণের আলামত আছে কি না—এ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেননি তিনি।
গত ২০ মার্চ তনুর লাশ কুমিল্লার ময়নামতি সেনানিবাসের পাওয়ার হাউসের অদূরের কালভার্টের পাশে ঝোপ থেকে উদ্ধার করা হয়। ২১ মার্চ তনুর লাশের প্রথম ময়নাতদন্ত হয়। এতে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত নয় এবং ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন দেন চিকিৎসক শারমিন সুলতানা। ওই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন তনুর বাবা-মা। পরবর্তীতে ২৮ মার্চ আদালত নির্দেশ দেন, তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করার। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ মার্চ তনুর লাশ মুরাদনগর উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের বাড়ির কবরস্থান থেকে উত্তোলন করা হয়। ওই দিনই দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মহসিন উজ জামান চৌধুরী তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেন। ওই বোর্ডের প্রধান হলেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামদা প্রসাদ সাহা, আর দুই সদস্য একই কলেজের গাইনি বিভাগের প্রধান করুণা রাণী কর্মকার ও ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক মো. ওমর ফারুক। ময়নাতদন্তের সময় নমুনা হিসেবে তনুর শরীর থেকে বিভিন্ন অংশ নেওয়া হয়। পরে সিআইডির রাজধানীর মালিবাগের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে ওই নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এতে চারটি প্রোফাইল পাওয়া যায়। এর মধ্যে একটি তনুর, অন্য তিনটি তিন ব্যক্তির। ডিএনএ প্রতিবেদনে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়। এ অবস্থায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তৈরির জন্য ডিএনএ প্রতিবেদন পেতে ছয় দফা সিআইডি ও মেডিকেল বোর্ডের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়।
৫ জুন বিকেলে কুমিল্লার অতিরিক্ত প্রধান নির্বাহী হাকিম জয়নাব বেগম ডিএনএর পুরো প্রতিবেদন দ্বিতীয় ময়নাতদন্তকারী মেডিকেল বোর্ডকে দেওয়ার জন্য আদেশ দেন। আদালতের ওই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডি ডিএনএর সাতটি পরীক্ষার প্রতিবেদনই মেডিকেল বোর্ডকে গত মঙ্গলবার দুপুরে দেয়। ওই প্রতিবেদন পাওয়ার পর গতকাল শুক্রবার চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়।