খোলা বাজার২৪, রোববার, ১২ জুন ২০১৬: জেসিকা চাকমা, রাঙ্গামাটি : কল্পনা চাকমার অপহরণ ঘটনার বিশ বছরপূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে রোববার রাঙ্গামাটিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে অবিলম্বে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করা হয়েছে।
ঘটনার দুই দশকপূর্তিতে অবিলম্বে কল্পনা চাকমা অপহরণ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে তাদেরকে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সকাল ১১টায় রাঙ্গামাটি শহরে এক বিক্ষোভ মিছিল প্রদক্ষিণ শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সহ-সভাপতি সোনারাণী চাকমার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সুপ্রভা চাকমা, কল্পনা অপহরণ মামলার আইনজীবী ও ব্লাস্টের রাঙ্গামাটি জেলার সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট জুয়েল দেওয়ান, পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অমিতাভ তঞ্চঙ্গ্যা, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পুলক চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী দীপা চাকমা প্রমুখ। সমাবেশ পরিচালনা করেন মহিলা সমিতির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জোনাকী চাকমা।
সমাবেশে ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, দীর্ঘ বিশ বছরেও অপহৃত কল্পনা চাকমার হদিস দিতে না এবং দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় এনে তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে না পারা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা এবং লজ্জাজনক। তারা কল্পনা অপরহরণ ঘটনার যথাযথ ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী, সরকার, বিচার বিভাগ ও সেনাবাহিনীর দায়-দায়িত্ব রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
বক্তারা বলেন, কল্পনা চাকমা অপরহরণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত না হওয়ায় পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারীদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যা, ধর্ষণ উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। অবিলম্বে কল্পনা অপহরণ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে রিপোর্ট প্রকাশের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন রাতে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার নিউ লাল্যাঘোনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অপহরণের শিকার হন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমা। ওই ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় তৎকালিন স্থানীয় সেনাক্যাম্প কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফেরদৌসসহ তার সহযোগীদের। ঘটনার পরপরই ফেরদৌসকে প্রধান আসামি করে মামলা করে কল্পনার পরিবার। কিন্তু আজও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হয়নি। হদিস মেলেনি কল্পনা চাকমার।