খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৩ জুন ২০১৬: ঝিনাইদহ : জেলার ছয় উপজেলায় অভিযান চালিয়ে দুই জঙ্গী ও জামাত-শিবিরের ৮ নেতাকর্মীসহ ৩৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ। রোববার মধ্যরাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এদের আটক করা হয়।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার আলী শেখ জানান, পুলিশের বিশেষ অভিযানে কালীগঞ্জ উপজেলা থেকে শাহিনুর রহমান শাহিন (২৮) নামে এক জঙ্গীকে আটক করা হয়। শাহিন ওই উপজেলার বুজরুক মুন্দিয়া গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে। সে জঙ্গী সংগঠন আল্লাহর দলের সদস্য বলে জানা গেছে।
এছাড়া, শৈলকুপা থেকে ইউনুস আলী (৩৭) নামে এক জেএমবি সদস্যকে আটক করা হয়েছে। ইউনুচ ওই উপজেলার দেবীনগর গ্রামের জাইবার আলীর ছেলে।
তিনি জানান, আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞিসাবাদ শেষে সোমবার বিকালে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
এদিন হিন্দু বৈদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় ও ঝিনাইদহ জেলা নেতারা পুরোহিতের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে হত্যার বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুসিয়ারী দেন। এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার প্রতিনিধি হিসেবে সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধূরী শনিবার পুরোহিতের বাড়িতে আসেন সমবেদনা জানাতে।
তিনি এ সময় বলেন,
রাজনৈতিক ভাবে দোষারোপ না করে ঝিনাইদহের পুরোহিত হত্যার প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন করে হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে শাস্তির ব্যবস্থা করুন। তা না হলে দেশে একের পর এক হিন্দু স¤প্রদায়ের মানুষ খুন হতে থাকলে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতি বিঘিœত হবে।
এ ছাড়া ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার, জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার, পুলিশ সুপার আলতাফ হোসেন, কেন্দ্রীয় পুজা উদযাপন পরিষদের নেতা বাবু কনক কান্তি দাস, ঝিনাইদহ জেলা হিন্দু বৈদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক সুবীর কুমার সমাদ্দারসহ সরকারী কর্মকর্তা ও বিভিন্নি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগন সর্বক্ষন নিহত পুরোহিতের পরিবারের খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
সর্বশেষ পুলিশের পক্ষ থেকে পুরোহিত হত্যার মোটিভ ও ক্লু উদ্ধারের দাবী করা হলেও নিহতর পরিবার এ নিয়ে সন্তষ্ট নয়। তারা দৃশ্যমান ফলাফল দেখতে চান। নিহত আনন্দ গোপালের স্ত্রী শেফালী গাঙ্গুলী, ছেলে অরুন গাঙ্গুলী, সিন্ধু গাঙ্গুলী, মেয়ে রিনা গাঙ্গুলী, মিনা গাঙ্গুলী ও আর্চনা গাঙ্গুলীসহ পরিবারের সদস্যরা সোমবার জানান,
খুনিদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত তারা শান্তি পাচ্ছেন না। স্ত্রী শেফালী গাঙ্গুলী কান্না ভেজা কন্ঠে জানান, সরকারী সহায়তা আর মন্ত্রী এমপিদের আশ্বাস দিয়ে আমাদের কি হবে ? যদি স্বামী হত্যার খুনিরা গ্রেফতার না হয়।
উল্লেখ্য গত মঙ্গলবার (৭ জুন) সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের মহিষারভাগাড় বিলে আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলী ওরফে নন্দকে (৭০) গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আনন্দ গোপাল সদর উপজেলার কোরতিপাড়া গ্রামের মৃত সত্য গোপালের ছেলে। এ হত্যাকান্ডের পর আইএস এর নামে দায় স্বীকার করা হয়।