খোলা বাজার২৪, সোমবার, ১৩ জুন ২০১৬: কমিশনের (ইসি) নিবন্ধিত ৪০ রাজনৈতিক দলকে বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেওয়ার তাগিদ দিয়ে চিঠি পাঠাচ্ছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। তবে উচ্চ আদালতের রায়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত হওয়ায় দলটিকে এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি দেওয়া হচ্ছে না।
আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে হিসাব জমা দেওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এ সপ্তাহেই এ চিঠি পাঠানো হচ্ছে বলে ইসি সূত্রে জানা যায়।
সম্প্রতি কমিশন সভায় বিষয়টি অনুমোদন দেওয়ায় সোমবার চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি শেষ করেছে ইসির সংশ্লিষ্ট শাখা। তবে বরাবরের মতো এবারো জামায়াতকে চিঠি দেওয়ার তালিকা থেকে বাদ রাখা হয়েছে। এছাড়া বাকি ৪০টি দলের সাধারণ সম্পাদক/মহাসচিব বরাবর চিঠি দেওয়া হচ্ছে বলে ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
ইসির কর্মকর্তা রোমান মাহবুব জানান, বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়ার তাগিদ দিয়ে ৪০টি দলের সাধারণ সম্পাদক/মহাসচিব বরাবর একটি চিঠি পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। দুয়েকদিনের মধ্যেই এ চিঠি সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে পাঠানো হবে। চিঠিতে দলগুলোর হিসাব জমা দিতে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। এ সময়ের পর কোনোভাবেই হিসাব নেওয়া হবে না। বিষয়টি আগে থেকেই সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছে।
ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কোন খাত থেকে কত টাকা আয় হয়েছে, কত টাকা ব্যয় হয়েছে, বিল-ভাউচারসহ তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য কমিশনের নির্ধারিত একটি ছকে জমা দিতে হবে। কমিশন থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে আয়-ব্যয়ের হিসাবের ফরম দেওয়া হয়। রাজনৈতিক দলগুলোকে আয়-ব্যয়ের হিসাব দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিটি খাত অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট তথ্য তারিখসহ উল্লেখ করতে হবে।
ইসি সূত্র আরো জানায়, গত বছর কয়েকটি দল নির্দিষ্ট সময়ের পরে তাদের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দিলেও তাদের সে হিসাব গ্রহণ করেনি কমিশন।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ও রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা অনুযায়ী, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে পূর্বের পঞ্জিকা বছরের আর্থিক লেনদেনের হিসাব প্রতিটি নিবন্ধিত দলকে জমা দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি রেজিস্টার্ড চার্টার্ড অ্যাকাউন্টিং ফার্ম দিয়ে দলের হিসাব অডিট করাতে হবে। এ হিসাবে সদস্য সংগ্রহসহ কোন খাত থেকে কত টাকা আয় হয়েছে, কত টাকা ব্যয় হয়েছে বিল-ভাউচারসহ তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য কমিশনে জমা দিতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২-এর ৯০-এইচ (১) (সি) ধারা অনুযায়ী নিবন্ধিত কোনো দল যদি পরপর তিন বছর কমিশনে তথ্য প্রদান করতে ব্যর্থ হয় তবে সে দলের নিবন্ধন বাতিল করতে পারবে কমিশন।
নিবন্ধন অবৈধ থাকায় চিঠি পাচ্ছে না জামায়াত
আদালতের রায়ে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত থাকা জামায়াতে ইসলামীকে এ চিঠি দেওয়া হচ্ছে না। নির্বাচনে অংশ নিতে ২০০৮ সালে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হওয়ার পর ৩৯টি দল তালিকাভুক্ত হয়। পরে সংশোধিত গঠনতন্ত্র দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০০৯ সালে ফ্রিডম পার্টির নিবন্ধন বাতিল করা হয়। দশম সংসদ নির্বাচনের আগে তিনটি দল নিবন্ধিত তালিকা যোগ হলেও নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত হওয়ায় বাদ পড়ে জামায়াত। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট আদালতের রায়ে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত হয়। বর্তমানে ইসির তালিকায় ৪০টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধিত রয়েছে।