Wed. Apr 30th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

1kখোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ১৪ জুন ২০১৬: পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্র তৈরির জন্য জাসদকে দায়ী করে এই দল থেকে মন্ত্রী করার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করার কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।
সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সভায় বক্তব্যে ‘হঠকারী দল’ জাসদ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শও ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের দেন এই ছাত্র সংগঠনটির সাবেক নেতা আশরাফ।
স্বাধীনতা পরবর্তী জাসদের ভূমিকা নিয়ে এক বছর আগে দলটিকে নিয়ে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা সরব হয়েছিলেন।
তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনা হলেও তা স্তিমিত হয়ে পড়ার বছরকাল পর ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক নিজেদের জোট শরিক দলটিকে আবার আক্রমণ করলেন।
টিএসসি মিলনায়তনে ছাত্রলীগের বর্ধিত সভার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আশরাফ বলেন, “বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের নামে ছাত্রলীগ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে জাসদ গঠন করে। মু্ক্িতযুদ্ধের চেতনাকে জাসদ নামক বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদীরা সম্পূর্ণ ভিন্ন দিকে পরিচালিত করে।
“মুক্তিযুদ্ধ আমাদের ইতিহাসের একটি অংশ। কিন্তু জাসদের নেতা-কর্মীরা এই সফল মুক্তিযুদ্ধকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছিল। বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার আগেই দেশকে ছিন্নভিন্ন করার চেষ্টা করেছিল।”
“তারা যদি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার সমস্ত পরিবেশ সৃষ্টি না করত, তবে বাংলাদেশ একটি ভিন্ন বাংলাদেশ হত,” বলেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর পঁচাত্তরে হত্যাকাণ্ডের শিকার সৈয়দ নজরুল ইসলামের ছেলে আশরাফ।
স্বাধীনতা পরবর্তী ভূমিকার জন্য সমালোচনা করলেও আওয়ামী লীগ জাসদকে পরে তাদের রাজনৈতিক জোটে নিয়েছে। জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু দ্বিতীয় দফায় শেখ হাসিনার সরকারে মন্ত্রিত্বে রয়েছেন।
আশরাফ বলেন, “বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে দেশ আগেই অর্থনৈতিক অগ্রসরতার অর্জন করত। শুধু হঠকারীদের কারণে তা সম্ভব হয়নি।
“এদের একজনকে আবার মন্ত্রিত্বও দেওয়া হযেছে, যার প্রায়শ্চিত্ত আওয়ামী লীগকে আজীবন করতে হবে।”
পূর্বের ইতিহাস জেনে এইসব ‘হঠকারীদের’ এড়িয়ে চলতে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের পরামর্শ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আশরাফ।
গত বছর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্র তৈরির জন্য জাসদকে দায়ী করলে আরও কয়েকজন নেতা তার সঙ্গে সুর মেলান।
তার প্রতিক্রিয়ায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু অতীত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি না করতে বর্তমান রাজনৈতিক মিত্র দলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরোধিতার ওই অবস্থানের মূল্যায়নের প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, “চলার পথে বহু পদক্ষেপ নিতে হয়, কোনটা সঠিক কোনটা বেঠিক, এটা ইতিহাস বিচার করবে।”
তবে বর্তমান ঐক্যে কোনো ফাটল ধরার সম্ভাবনা নাকচ করে ইনু বলেছিলেন, “আওয়ামী লীগ ও জাসদ নীতিগতভাবে ঐক্যবদ্ধ, আন্দোলন-নির্বাচন এবং সরকার পরিচালনায় আমরা একসঙ্গে আছি এবং আমরা মনে করি, এই লড়াইটা শেষ পর্যন্ত নেওয়ার জন্য ঐক্য দরকার।”
ছাত্রলীগ সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপসিস্থত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না, সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার প্রমুখ।